ঢাকার গোপীবাগে গত ৫ জানুয়ারি রাতে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজবাড়ীর নিখোঁজ আবু তালহা ও চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমির (২৮) মরদেহ ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ পরিবারের কাছে আজ তাদের মরদেহ হস্তান্তর করবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে মৃত আবু তালহার বাবা আব্দুল হক ও চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমির চাচা অতনু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই ঘটনায় নিখোঁজ এলিনা ইয়াসমিনের মরদেহ শনাক্ত করা হয় বলে জানান তার চাচা নজরুল ইসলাম ।
মৃত আবু তালহা রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের বড়ইচারা গ্রামের আবদুল হক মন্ডলের ছেলে ও চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমি রাজবাড়ীর সদর উপজেলার খানগঞ্জ ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের চিত্তরঞ্জন প্রামাণিকের মেয়ে। আবু তালহা সৈয়দপুরের বাংলাদেশ আর্মি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আর চন্দ্রিমা ঢাকার একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের ফার্মাসিস্ট বিভাগে পড়াশোনা করতেন।
আবু তালহার বাবা আব্দুল হক বলেন, আবু তালহা গত ৫ জানুয়ারি ঢাকার উদ্দেশ্যে ফরিদপুর স্টেশন থেকে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রা করেছিল। কিন্তু কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রবেশের আগে গোপীবাগে ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাইনি আমরা।
প্রায় ১ মাস ৯ দিন পর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল থেকে আমাকে ফোন দিয়ে আবু তালহার মরদেহ শনাক্তের বিষয়টি জানিয়েছে। কিছু আইনি জটিলতা শেষে আজ মরদেহ আমাদের কাছে হস্তান্তর করবে কর্তৃপক্ষ।
মরদেহ আমরা রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসব।সেখানে জানাজা করে মরদেহ দাফন করা হবে।
তিনি দাবি করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রেনের জানালার বাইরে দুই হাত বের করে বাঁচার আকুতি করা যে ছবিটি ভাইরাল হয়েছিল সেটিই ছিল আমার ছেলে আবু তালহা। একটা নিষ্পাপ ছেলে আগুনে দগ্ধ হয়ে কী মধ্যে দিয়ে যন্ত্রণার মারা গেল। কী দোষ ছিল আমার তালহার?
মৃত চন্দ্রিমা চৌধুরী সৌমির চাচা অতনু বলেন, ঢাকা মেডিকেল থেকে আমাদের গতকাল রাতে ফোন দিয়ে জানিয়েছে যে ডিএনএ টেস্টে সৌমির মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে। আজ আমরা পরিবারের লোকজন গিয়ে ঢাকা মেডিকেল থেকে সৌমির মরদেহ নিয়ে আসব।
প্রসঙ্গত, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে এলিনা ইয়াসমিন, চন্দ্রিমা চৌধুরী ওরফে সৌমি (২৮) ও আবু তালহা (২৮) নিখোঁজ ছিলেন।
জেএন/এমআর