ওরা করবে জয়

ওদের কেউ আসছিলেন হুইলচেয়ারে চেপে। আবার কেউ আসছিলেন ক্রাচে ভর দিয়ে। অনেকের আবার এই সামর্থ্যও ছিল না। তবে পিছিয়ে ছিলেন না তাঁরাও। তাঁদের কেউ এসেছেন মায়ের কোলে, আবার কেউবা বাবার কাঁধে ভর করে।

- Advertisement -

শারীরিক বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এসব ব্যক্তির মনে অদম্য ইচ্ছা। অদম্য মনোবলের এ ব্যক্তিরা যেন সমাজকে বলতে চাইছেন, তাঁরা কেউ প্রতিবন্ধী নন, প্রতিযোগী। প্রতিযোগিতা করতেই তাদের পথচলা। জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যেই তাদের এগিয়ে চলা।

- Advertisement -google news follower

বলছিলাম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিএসডির (কনসার্ন সার্ভিসেস ফর ডিসঅ্যাবেলড্) কথা। সোমবার (৩ ডিসেম্বর) ২৭তম আন্তর্জাতিক ও ২০তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষ্যে এখানে বসে মিলনমেলা।

মিলনমেলায় ‘অন্যভাবে সক্ষম’ দূর-দূরান্তের অসংখ্য ব্যক্তি ছুটে আসেন নন্দীরহাটে। বছরের এ দিনটি তাঁদের জন্য উৎসবের। কারণ দিনটিতে তাঁরা যে পান ‘বিশেষ মর্যাদা’!

- Advertisement -islamibank

দিনজুড়ে আনন্দের পাশাপাশি চলে মজাদার খাওয়া-দাওয়া। আবার যাওয়ার সময় উপহার হিসেবে কারো কাছে থাকে হুইলচেয়ার, কারো হাতে ক্রাচ। যাদের এসবের প্রয়োজন নেই মন খারাপ করতে হয় না তাঁদেরও। তাঁদের জন্য যে রয়েছে শীতবস্ত্র কম্বল।

এবারও দিনব্যাপী মিলনমেলার শুরুটা হয় ‘ভিন্নভাবে সক্ষম’ শিশুদের সঙ্গীতে। এর আগে অবশ্য বের করা হয় র্যালি। পরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।

ওরা করবে জয়

ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের উৎসাহ দিতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম। সিএসডির সহসভাপতি বরেণ্য সাংবাদিক অরুণ দাশগুপ্তের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার নিবার্হী পরিচালক রঞ্জিত গগৈ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী, হাটহাজারী প্রেসক্লাব সভাপতি কেশব বড়ুয়া, অধ্যাপক শিশির বড়ুয়া, অধ্যাপক খোরশেদ আলম ও অ্যাডভোকেট জোবাইদা সরোয়ার নীপা। রিয়াজ মাহমুদ ও ডিগনিটি চাকমার সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসডি সম্পাদক বিশ্বজিত গুপ্ত বিশু।

ওরা করবে জয়আলোচনা সভার পরই ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের হাতে তুলে দেওয়া হয় হুইলচেয়ার, ক্রাচ ও কম্বল। অনুষ্ঠানস্থলের বিপরীত প্রান্তে তখন চলছে দুপুরের খাবারের আয়োজন। বিশাল ডেকচি থেকে বাবুর্চির তুলে দেওয়া খাবার টেবিল সাজাতে ব্যস্ত স্বেচ্ছাসেবকরা। খাসির মাংসের আখনির সঙ্গে আরো রয়েছে সালাদ-ডিম।

কেউবা খাচ্ছেন চেয়ার-টেবিলে বসে। আবার কেউবা প্যাকেটভর্তি খাবার নিজের কাছে রেখে দিচ্ছেন বাসায় গিয়ে ছোট ভাই-বোনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খেতে।

‘অন্যভাবে সক্ষম’ আড়াই শতাধিক ব্যক্তির জন্য খাবারের এ আয়োজন করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। এ পর্যায়ে একটি কথা উল্লেখ করতে হয়- প্রতি মাসেই সিএসডির অন্যভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের সহায়তা করেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। না, চসিক থেকে নয়, ব্যক্তিগত তহবিল থেকেই এ অনুদান দেন নগরপিতা।

এখন ফেরার পালা। প্রতিযোগীদের সবাই ফিরছেন হাসিমুখে। কারণ আজ যে তাঁরা পরিবারের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন কিছু না কিছু। হোক না সেটা কম্বল কিংবা একবেলার খাবার!

লেখক: নির্বাহী সম্পাদক, জয়নিউজ

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ