ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে সরকারের লাখ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসের ছক কষছে বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
এমন তথ্য রয়েছে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে। বসে নেই তারা,বাড়িয়েছে নজরদারি। আর তারই প্রতিফলন ঘটল মঙ্গলবার। চট্টগ্রাম বন্দর গেটেই ধরা পড়ে গেল বড় একটি কাপড়ের চালান।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার আমদানিকারক নাজমুল হোসিয়ারি প্রাইভেট লিমিটেড পলিএস্টার ফেব্রিকস ঘোষণায় এসব পর্দা ও সোফার কাপড় আমদানি করেছিল।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, সরকারের অন্তত অর্ধ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার লক্ষ্যে মিথ্যা ঘোষণায় এসব পর্দা ও সোফার কাপড় আমদানি করেছিল আমদানিকারক নাজমুল হোসিয়ারি প্রাইভেট লিমিটেড।
মঙ্গলবার রাতে ভুয়া কাগজপত্র দাখিল করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে চালান খালাসের চেষ্টা করা হচ্ছিল। এ সময় বন্দর গেটে সন্দেহ হলে কাপড়ের চালানটি জব্দ করেছে বন্দর ও কাস্টমস কর্মকর্তারা। দুই ট্রাকে ২৮ টন কাপড় জব্দ করার পাশাপাশি একজন ট্রাকচালককে আটক করা হয়েছে।
একই আমদানিকারকের আরো অন্তত পাঁচটি চালান চট্টগ্রাম ও ঢাকার কমলাপুর আইসিডি দিয়ে খালাসের অপেক্ষায় আছে বলেও জানায় কাস্টমস।
এদিকে বন্দর কর্মকর্তারা জানান, চীন থেকে আসা এ চালানটি গত ১৯ ফেব্রুয়ারি খালাসের জন্য নথি দাখিল করে আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মাহমুদ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
মাহমুদ ট্রেডের জেটি সরকার পদে কর্মরত রবিউল ইসলাম চালানটি খালাসে কাগজপত্র দাখিল করেছেন বলে কর্মকর্তারা জানান। চালানটি জব্দ করার পর রবিউল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় বন্দর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান বন্দর কর্মকর্তারা।
এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার এ কে এম খায়রুল বাসার জানান, প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আগেও তৈরি পোশাকশিল্পের কাঁচামাল আমদানির নামে বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি করার অভিযোগে একাধিক মামলা করেছে কাস্টমস।
ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আওতায় প্রতিষ্ঠানটির আমদানি করা সব ধরনের পণ্য কায়িক পরীক্ষা নিশ্চিত করে খালাসের নির্দেশনা আছে। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ মাস আগের একটি চালান নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তবে ওই চালানটি খালাসে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।
খায়রুল বাসার বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে খালাসের সময় জব্দ করা চালানটিও নজরদারিতে ছিল। চালানটি বৈধভাবে খালাসের সুযোগ না থাকায় ভুয়া কাগজপত্র সাবমিট করে খালাসের চেষ্টা হচ্ছিল।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ছাড়াও আর কারা জড়িত ছিল, তা খতিয়ে দেখতে কমিশনার নির্দেশনা দিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
জানতে চাইলে মাহমুদ ট্রেডের স্বত্বাধিকারী শফিকুল আহাদ বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে এখনো আমি কিছু জানি না। এ ধরনের অনিয়মের বিষয়ে আমার জানা নেই। রবিউল ইসলাম নামে আমার কোনো কর্মচারী নেই। অন্য কেউ হয়তো আমাদের কোম্পানির নাম ব্যবহার করেছে।
জেএন/পিআর