সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা-১৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার বলেছেন, আমার নির্বাচনী এলাকার মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজটিকে বিগত সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ধ্বংস করেছেন। এজন্য তার বিচার চাই।
বক্তব্যে কামাল আহমেদ মজুমদার বিগত সরকারের শিক্ষামন্ত্রী বললেও নাম উল্লেখ করেননি।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন তিনি।
গত সেপ্টেম্বরে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের তখনকার অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেনকে অবৈধ ঘোষণা করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটি। তিনি সোয়া দুই বছর ধরে অবৈধভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের ২ জুলাই বয়স ৬০ বছর হওয়ার পরও তার চাকরির মেয়াদ তিন বছর বাড়ায় গভর্নিং বডি। এরপর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরেরও তদন্তে ফরহাদ হোসেনের নিয়োগ বিধিসম্মত না হওয়ার কথা জানানো হয়। এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ায়। পরে আদালতের নির্দেশে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠতম শিক্ষক মো. জাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিতে নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে পরিচালনা কমিটি কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির মূল বালিকা বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান জাকির হোসেন। তখন দুই পক্ষের রেষারেষিতে অচলাবস্থা তৈরি হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন তৎকালীন শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার।
কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা (মিরপুর-কাফরুল) অসংখ্য জামায়াতের নেতাকর্মী বসবাস করে। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান চৌধুরী প্রার্থী হয়েছিলেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে। সেখানের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সেটি এখন ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় স্কুলটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। হঠাৎ করে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও ঢাকার ডিসির কারসাজিতে জামায়াতকে ক্ষমতায় বসিয়ে আমার গড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গত শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। ২৩০০ ছেলেমেয়ে ফেল করেছে। আগের বছর থেকে ১২০০ ছেলে মেয়ে জিপিএ-৫ কম পেয়েছে।
কামাল আহমেদ মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক জামায়াতের, তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। সে প্যারালাইসিসে ভুগছে, সে কথা বলতে পারে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বারবার বলার পরেও তাকে এখনো সরানো হয়নি। কোর্টের পর কোর্ট মামলা তারা করছে, স্কুলটাকে ধ্বংসের মুখোমুখি তারা নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান স্কুলটাকে আপনি রক্ষা করুন। আপনার বরাদ্দ দেওয়া জমিতে আমি তিলে তিলে এ স্কুলটি গড়ে তুলেছি। এটি ননএমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আমি জানি না কী কারণে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর কুনজর পড়েছে স্কুলটির ওপর। আমি তারও বিচার চাই।
জেএন/এমআর