চলতি বছরের জুন মাসে টেকনাফের শামলাপুর এলাকা দিয়ে ট্রলারে করে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য সমুদ্র পাড়ি দেন ১৭ বাংলাদেশিসহ শতাধিক যাত্রী। কিন্তু মাঝপথে ট্রলার নষ্ট হয়ে যাওয়াতে সাগরে তিন দিন ভাসার পর মিয়ানমার সীমানায় পৌঁছায় ট্রলারটি।
এর পরেই সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের আটক করে। দেশটির কারাগারে ছয় মাস সাজা ভোগ করে অবশেষে বাংলাদেশ সরকারের চেষ্টায় মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরেছেন সেই ১৭ বাংলাদেশি।
বুধবার (৫ ডিসেম্বর) মিয়ানমারে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে তাদের হস্তান্তর করে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগের প্রতিনিধি দল। সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথে বাংলাদেশিদের আটক করা হয়েছিল। দেশে ফিরিয়ে আনার পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করে বিজিবি।
ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বদিউল আলম, মো. হেলাল, জামাল উদ্দিন, সে থু অং মারমা, ইউ সা খ মারমা, রহিম উল্লাহ, মুফিজুর রহমান, মো. শাকের, আজিজুল ইসলাম, মো. শফিক, মো. জালার উদ্দিন, মিজানুর রহমান, আজিজুল্লাহ, আব্দুস সালাম, নুরুল আলম, মো. জালাল এবং আবু তাহের।
বিজিবির তথ্য মতে, মংডুতে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ-জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও মিয়ানমার মংডুর অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তা হটেন লিনেন এর নেতৃত্বে ১২ সদস্যের প্রতিনিধি দলের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে ১৭ বাংলাদেশিকে সঙ্গে নিয়ে টেকনাফে সদর বিওপি চৌকি সংলগ্ন বাংলাদেশ-মিয়ানমারের নতুন ট্রানজিট জেটি ঘাটে পৌঁছায় বিজিবির দলটি। পরে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করেন বিজিবি সদস্যরা।
ফেরত আসা মোঃ শফিক বলেন, ‘চলতি বছর জুন মাসে টেকনাফের শামলাপুর এলাকা দিয়ে ট্রলারে করে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য সমুদ্র পাড়ি দিই। কিন্তু মাঝপথে ট্রলার নষ্ট হয়ে যায়। সাগরে তিন দিন ভাসার পর মিয়ানমার সীমানায় পৌঁছালে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের আটক করে। ওই ট্রলারে প্রায় শতাধিক মালয়েশিয়াগামী বাংলাদেশি ছিলেন। ছয় মাস সাজা ভোগ করে বাংলাদেশ সরকারের চেষ্টায় স্বদেশে ফেরত আসতে পেরে বাংলাদেশকে সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আছাদুদ-জামান চৌধুরী বলেন, ‘সাগর পথে মিয়ানমার যাওয়ার পথে এই বাংলাদেশি ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছিল। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর দফায় দফায় বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফেরত আনা হয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগ শেষে দেশে ফেরত আসা ব্যক্তিদের টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’