চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের ব্যানারে নির্বাচন করছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী। রুহী নির্বাচনে আছেন এখনো। আর তাই সংশ্লিষ্টরা ভাবছেন, এই আসনে ‘ফ্যাক্টর’ হবে হেফাজতে ইসলামের ‘ফিক্সড’ ভোট।
জানা গেছে, সরকার আর হেফাজতের দূরত্ব ঘোচাতে ভূমিকা রাখা রুহী এই আসন আওয়ামী লীগের কাছে চেয়েছেন। যদিও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের প্রার্থী এখানে ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
সম্প্রতি হেফাজতে ইসলাম বিশাল আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়। সেই সংবর্ধনায় রুহীর ছিল বিরাট ভূমিকা।
হাটহাজারীর রাজনীতি সচেতনরা বলছেন, এ আসনটিতে কওমীপন্থি ভোটারদের আধিপত্য রয়েছে বেশ। হেফাজতের বেশকিছু ‘ফিক্সড’ ভোটও রয়েছে এখানে।
বিএনপি ও হেফাজতপন্থি ভোটার বেশি হওয়ায় স্বাধীনতার পর এ আসনে আওয়ামী লীগ একবারই জয়ী হয়েছিল। প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এমএ ওয়াহাব ছিলেন ওই সময় নৌকার একমাত্র কান্ডারী। এরপর থেকে ধানের শীষের দখলেই ছিল হাটহাজারী।
জানা গেছে, হেফাজত ছিল বিএনপিমুখী। তাদের একটি অংশ এখন আওয়ামী লীগে ঝুঁকেছে। আরেকটি অংশ নীরব। যে অংশ নীরব তারা কোন দিকে যাচ্ছে, তা স্পষ্ট নয়।
দ্বিধাবিভক্ত হেফাজতের নির্ধারিত ভোট কোনো দলেরই একচেটিয়া পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ হেফাজতের আমীর আল্লামা শফির সঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষপর্যায়ে যোগাযোগ ভালো হলেও, অন্তর্কোন্দলের কারণে মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে রয়েছে দূরত্ব।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে হেফাজত নেতৃত্বের বড় একটা অংশের অনুপস্থিতি তারই ইঙ্গিতবাহী। কওমী মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তরকে স্বীকৃতি দেওয়ায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দীতে শুকরানা মাহফিলে হেফাজত আমীর আল্লামা আহমদ শফী উপস্থিত থাকলেও, মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী তখন তার গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ির বাবুনগরেই ছিলেন।
এছাড়া বাবুনগরীপন্থি প্রভাবশালী নেতা মহিববুল্লাহ বাবুনগরী, নূর হোসাইন কাসেমী, হাফেজ তাজুল ইসলাম, তফাজ্জল হক হবিগঞ্জী, সুলতান জওক নদভী, আব্দুর রব ইউসুফী, আব্দুল মালেক হালিম, মুফতি ইজাহারুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, ফজলুল করিম কাসেমী ও আজিজুল হক ইসলামাবাদী এ শোকরানা মাহফিলে অংশগ্রহণ করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী জয়নিউজকে বলেন, আমি নির্বাচনী মাঠে আছি। ইসলামী ঐক্যজোট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব। এখনো পর্যন্ত কোনো জোটের সাথে নেই। শুধুমাত্র ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী আমি। আমার সাথে হাটহাজারীর আপমর জনতা আছে। আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।