মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৪২টি লোকসভা আসনে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন। একাধিক নতুন নাম যেমন রয়েছে, তেমন একাধিক নাম বাদও পড়ল।
মমতা ব্যানার্জির ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন প্রার্থী তালিকায় বসিরহাটের তারকা এমপি চিত্রনায়িকা নুসরত জাহান আর পাননি টিকিট।
তার বদলে এবারের লোকসভা নির্বাচনে ভূমিপুত্র হাজি নুরুল ইসলামের মতো দক্ষ সংগঠকের ওপর আস্থা রেখেছে ঘাসফুল শিবির।
শোনা যাচ্ছে, তার প্রতিপক্ষ হিসেবে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থী ভারতীয় জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোহম্মদ সামি। যদিও, বিষয়টি এখনো জল্পনার স্তরেই রয়েছে। কোনো তরফ থেকে জল্পনায় চূড়ান্ত বক্তব্য আসেনি।
২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন হাজি নুরুল ইসলাম। বসিরহাট কেন্দ্রে ঘাসফুল ফুটিয়েছিলেন তিনি। তবে ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাট কেন্দ্র থেকে আর টিকিট পাননি। জঙ্গিপুর থেকে ভোটে লড়েছিলেন। সেখানে অবশ্য জিততে পারেননি। তার পরিবর্তে ইদ্রিস আলি ভোটে লড়ে জিতে যান। এর পর বিধানসভা ভোটে লড়েন। ২০১৬ এবং ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হাড়োয়া থেকে জেতেন।
হাড়োয়ার বিধায়ক হলেও বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের প্রথমে চেয়ারম্যান ছিলেন। গত বছর নভেম্বরে বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি হন। এবার তাকেই লোকসভার মুখ হিসাবে বেছে নিলো তৃণমূল।
গত লোকসভা নির্বাচনে তারকা প্রার্থী নুসরতেই আস্থা রেখেছিল তৃণমূল। এবার কেন দক্ষ সংগঠককেই তুরুপের তাস করল ঘাসফুল শিবির? রাজনৈতিক মহলের মতে, নুসরতকে নিয়ে জনমানসে ক্ষোভ ছিল। তারকা ইমেজে ভোটে জিতলেও কোনো দিন জনপ্রতিনিধি হয়ে উঠতে পারেননি নুসরত।
সম্প্রতি সন্দেশখালি ঘটনার পর তারকা এমপির দেখা না মেলায় আরো হতাশ বসিরহাটের মানুষজন। সম্ভবত সে কারণে হাইভোল্টেজ কেন্দ্রেই দক্ষ সংগঠকেই আস্থা তৃণমূলের।
বসিরহাট উত্তর, বসিরহাট দক্ষিণ, বাদুড়িয়া, হাড়োয়া, মিনাখাঁ, সন্দেশখালি ও হিঙ্গলগঞ্জ – এই সাত বিধানসভা নিয়ে গঠিত বসিরহাট লোকসভায় সংখ্যালঘু ভোট বড় ফ্যাক্টর। এই লোকসভা কেন্দ্রে মুসলমান ভোটার ৪৯ শতাংশ।
রাজনৈতিক মহলের কেউ কেউ মনে করছেন, সংখ্যালঘু ভোটকে টার্গেট করতে ফের হাজি নুরুল ইসলামকে প্রার্থী হিসাবে বেছে নিলো তৃণমূল। এরই মধ্যে আবার বসিরহাট লোকসভা আসন থেকে বিজেপির সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম নিয়ে তুমুল জল্পনা রয়েছে।
শোনা যাচ্ছে, বসিরহাট লোকসভা থেকে এবার নিজেদের প্রার্থী দিতে চলেছে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ। সেক্ষেত্রে তারাও যদি সংখ্যালঘু প্রার্থী ঘোষণা করে, তাহলে তা শাসকদল বা বিজেপি-দুইয়ের ক্ষেত্রেই মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
সে কারণেও হাজি নুরুল ইসলামকে প্রার্থী হিসেবে তৃণমূল বাছতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত কে জেতেন, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
জেএন/পিআর