এস আলম গ্রুপের রিফাইনড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছ থেকে আট হাজার মেট্রিক টন চিনি কিনছে সরকার। প্রতি কেজি ১৩৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে এই পরিমাণ চিনি কিনতে ব্যয় হবে ১০৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন হতে পারে।
জানা গেছে, রমজানে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে চিনি সরবরাহ অব্যাহত রাখতে অভ্যন্তরীণ বাজার এই পরিমাণ চিনি কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এ চিনি সরবরাহ করবে এস আলম রিফাইনড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারি মিলে দাম বেশি হওয়ায় বেসরকারি মিল থেকে কিনতে হচ্ছে চিনি। ইতঃপূর্বে চিনি সংগ্রহের জন্য দরপ্রস্তাব আহ্বান করার পরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি এবং দাম বেশি উল্লেখ করায় দরপ্রস্তাব বাতিল করতে হয়েছে।
সূত্র মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম বেড়ে যাওয়ায় টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারীদের কাছে প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকার পরিবর্তে দাম বাড়িয়ে প্রতি কেজি ১০০ টাকা দরে বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিল টিসিবি। কিন্তু নিম্ন আয়ের ভোক্তাদের কথা বিবেচনা করে পর দিনই বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে প্রতি কেজি চিনি পুনরায় ৭০ টাকা দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। সে হিসাবে প্রতি কেজি চিনিতে সরকারের ভর্তুকি দিতে হবে (১৩৪.৫০-৭০.০০)= ৬৪.৫০ টাকা।
সূত্র জানায়, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে টিসিবির বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনায় এক লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন চিনি ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে মোট ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন করেছে। এ ধারাবাহিকতায় এবার আট হাজার মেট্রিক টন (৫০ কেজির বস্তা) ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে।
জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন প্রতি কেজি চিনির মিলগেট মূল্য ১৬০ টাকা প্রস্তাব করেছিল, যা বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চিনির পরিবর্তে স্থানীয় বাজার/ আন্তর্জাতিক উৎস থেকে জরুরি ভিত্তিতে পবিত্র রমজান মাসের জন্য চিনি ক্রয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত বছর জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়টি দরপ্রস্তাবে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া তিনটি দরপ্রস্তাবে বেশি দাম প্রস্তাব করায় সেসব দরপ্রস্তাব বাতিল করা হয়। এ অবস্থায় রমজানকে সামনে রেখে তুলনামূলক কম মূল্যে ও স্বল্প সময়ে প্রাপ্তি বিবেচনায় স্থানীয়ভাবে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চিনি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্থানীয় রিফাইনারি সংস্থা এস আলম রিফাইনড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড দরপ্রস্তাব পাঠায়। ৫০ কেজির বস্তায় আট হাজার মে.টন চিনি সরবরাহে প্রতি কেজি চিনির দাম ২ শতাংশ এটিআই এবং টিসিবির গুদামে পৌঁছানো খরচসহ ১৩৫ টাকা উল্লেখ করে।
তবে নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে প্রতি কেজিতে ৫০ পয়সা কম দামে এই চিনি সংগ্রহের সিদ্ধান্ত হয়। অর্থাৎ প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ১৩৪.৫০ টাকা। দরপ্রস্তাবের শর্ত অনুযায়ী আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে টিসিবির গুদামে এই চিনি পৌঁছে যাবে বলে সূত্র জানায়।
এদিকে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ওই বৈঠকে বিদেশিদের জন্য ই-ভিসা চালু করার জন্য ই-ভিসা সিস্টেম প্রতিষ্ঠা ও ১০ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণে সুরক্ষা সেবা বিভাগের ১৬০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ের প্রস্তাবনাও উঠছে। ১৬০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে বিদেশিদের জন্য ই-ভিসা চালু করছে সরকার।
জেএন/পিআর
