বাংলাদেশি ২৩ নাবিকসহ জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’য় অবস্থানরত চার সোমালি জলদস্যুর ছবি প্রকাশ করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী।
শুক্রবার ভারতীয় নৌবাহিনীর মুখপাত্রের এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি প্রকাশ করা হয়। ছবিতে এমভি আবদুল্লাহ’য় টহলরত জলদস্যুদের চিহ্নিত করা হয়েছে। যাদের সবার হাতেই ভারী অস্ত্র রয়েছে।
ওই পোস্টে জানানো হয়, সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে সহায়তা করতে কাছাকাছি এলাকায় একটি ভারতীয় যুদ্ধজাহাজ ও একটি দূরপাল্লার সামুদ্রিক টহল উড়োজাহাজ অবস্থান করছে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে ভারতীয় নৌবাহিনী জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ’র হাইজ্যাক হওয়ার খবর পেয়ে গত মঙ্গলবারই (১২ মার্চ) ভারতীয় নৌবাহিনী দূরপাল্লার মেরিটাইম পেট্রোল এয়ারক্র্যাফ্ট এলআরএমপি পি-৮১ মোতায়েন করে।
পরে ভারতীয় নৌবাহিনী একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে। যুদ্ধজাহাজটি বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) জিম্মি জাহাজটিকে নজরদারি করতে শুরু করে। ওইদিন সকালে ভারতের যুদ্ধজাহাজটি সফলভাবে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে আটকে দেয়।
পরে, হাইজ্যাক করা ক্রু সদস্যদের (বাংলাদেশি নাগরিক) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যুদ্ধজাহাজটি সোমালিয়ার আঞ্চলিক জলসীমায় পৌঁছানো পর্যন্ত এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি অবস্থানে থাকে।
এদিকে ইইউ নৌবাহিনীও অপারেশন আটলান্টার আওতায় জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটিকে অনুসরণ করছে। আজ শুক্রবার সকালে, ইইউ নৌবাহিনী জানিয়েছে, তাদের সংগৃহীত ভিজ্যুয়াল তথ্যে দেখা গেছে, বর্তমানে জাহাজটিতে কমপক্ষে ১২ জন জলদস্যু অবস্থান করছে।
‘এমভি আবদুল্লাহকে’ অনুসরণ করছে ইইউয়ের যুদ্ধজাহাজ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনী বলছে, সোমালি জলদস্যুরা ডিসেম্বরে মাল্টিজ-পতাকাবাহী বাল্ক কার্গো জাহাজ রুয়েনকে আটক করেছিল। তারা তিনদিন আগে সোমালিয়ার উপকূলে বাংলাদেশের পতাকাবাহী একটি কার্গো জাহাজ দখলের জন্য মাল্টিজ জাহাজটি ব্যবহার করে থাকতে পারে।
মেরিটাইম সিকিউরিটি সেন্টার-হর্ন অফ আফ্রিকা (EUNAVFOR) এর পরিকল্পনা ও সমন্বয় কেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের নভেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এডেন উপসাগর এবং সোমালিয়া উপকূল থেকে ২০টি জাহাজ হাইজ্যাক করার চেষ্টা করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সে সময় জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। দস্যুদের কাছে জিম্মি হয় ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ২০ মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করে। পরে সেটি আরও এগিয়ে উপকূলের ৭ মাইলের মধ্যে অবস্থান নেয়। কিন্তু আজ বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ জাহাজটি আরও চলতে শুরু করেছে। এখনো এটি চলমান অবস্থায় আছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, আমাদের টেকনিক্যালরা স্যাটেলাইট অবস্থান দেখে নিশ্চিত হয়েছেন, ‘এমভি আবদুল্লাহকে আগের অবস্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জাহাজটি চলমান। কিন্তু কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে আমরা সেটি ট্রেস করার চেষ্টা করছি।
জেএন/এমআর