চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ইব্রাহিম নেওয়াজ (৩০) নামে সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। কয়েদির মৃত্যুর ঘটনায় করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে ‘আত্মহত্যার অপচেষ্টারত অবস্থায়’ ইব্রাহিমকে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোমবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতরে খাদ্য গুদামের সামনে চৌবাচ্চার টিনশেডের রডের সঙ্গে প্লাস্টিকের বস্তা ও কম্বলের বর্ডারের অংশ দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পাওয়া যায়। ঘটনাটি জানাজানি হয় মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকালে।
মারা যাওয়া কয়েদি ইব্রাহিম রাঙামাটি জেলার কোতোয়ালি থানাধীন আলমডক এলাকার আলী নেওয়াজের ছেলে। রাউজান থানার একটি অস্ত্র মামলায় ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ইব্রাহিম গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর কারাগারে যান।
এ ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকালে একটি ইউডি (অপমৃত্যু) মামলা করেছে জানিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম ওবায়েদুল হক বলেন, ওই কয়েদি আত্মহত্যা করেছেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন।
একজন কারা কর্মকর্তা বলেছেন, গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন ইব্রাহীম। সোমবার সন্ধ্যায় গণনার সময় একজন বন্দী কম হওয়ায় খোঁজ শুরু করেন কারারক্ষীরা।
পরে কারাগারের খাদ্য গুদামের সামনে চৌবাচ্চার টিন শেডে রডের সাথে প্লাস্টিকের বস্তা ও কম্বলের বর্ডারের অংশ গলায় পেঁচিয়ে তাকে ঝুলতে দেখা যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত ইব্রাহীম নেওয়াজের মামাতো ভাই নাইমুর রহমান তুর্য বলেন, ‘আমার ভাইকে অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর মধ্যে জেল সুপার হঠাৎ ফোন করে জানান আমার ভাই মারা গেছেন। এরপর সকালে আমরা কারাগারে যাই। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই।
পারিবারিক আলোচনা শেষে এ ঘটনায় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে কারা অভ্যন্তরে কয়েদির মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) টিপু সুলতানকে প্রধান করে বিভাগের আরও তিন জেলা কারাগারের তিন জেল সুপারকে সদস্য করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষ। তবে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা দেওয়া হয়নি।
এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রুবেল দে নামে এক হাজতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম কারাগারে। ওই ঘটনায় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মুহাম্মদ মঞ্জুর হোসেন ও চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার ওসি মো. আছহাব উদ্দিনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন নিহতের স্ত্রী। মামলার আবেদনের ১২ দিন পর গত ৩ মার্চ নির্যাতনের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিরূপণের জন্য আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেয়।
জেএন/এমআর