পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির দুর্গম বরকল উপজেলায় ‘অজ্ঞাত রোগে’র প্রকোপ দেখা দিয়েছে। উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নে এই রোগে এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরও প্রায় ১৩ জন এ রোগে আক্রান্ত রয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় একটি মেডিকেল টিম পাঠানো হচ্ছে ভূষণছড়া ইউনিয়নে। সেখানে পৌঁছানোর পর তারা বৃহস্পতিবার থেকে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করবেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ‘অজ্ঞাত’ এই রোগে পাঁচজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। স্বাস্থ্য বিভাগও এই রোগ সম্পর্কে নিশ্চি কিছু জানাতে পারেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরকল উপজেলার ৪ নম্বর ভূষণছড়া ইউনিয়নের ১৪৯ নম্বর গুইছড়ি মৌজার চান্দবিঘাট পাড়ায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় জানুয়ারি মাসে। রোগটিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে হঠাৎ তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়, শরীরে তীব্র জ্বর আসে, বমি বমি ভাব হয়। কেউ কেউ রক্ত বমিও করেন। এরকম উপসর্গ নিয়ে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচজন মারা গেছেন। আক্রান্ত রয়েছেন আরও ১০ থেকে ১৩ জন।
স্থানীয়রা বলছেন, গ্রামটি প্রত্যন্ত দুর্গম এলাকা হওয়ায় সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। গ্রামের আশপাশে কোনো স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্রও নেই। গ্রামবাসীরা পাহাড়ি বৈদ্য-করিরাজদের দ্বারস্থ হয়ে থাকেন। এদিকে কিছুদিন আগে গ্রামের একটি পুরনো বটবৃক্ষ কেটে ফেলা হয়েছে। পাড়াবাসীর বিশ্বাস, ওই গাছটি ছিল ‘আধ্যাত্মিক’, যা কেটে ফেলার কারণেই অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
চান্দনিঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘ওই এলাকায় কয়েকমাস হলো একটি অজ্ঞাত রোগ দেখা দিয়েছে। শরীর ব্যথা, জ্বর, বমি বমি ভাব, রক্তবমি দেখা যাচ্ছে রোগের উপসর্গ হিসেবে। এ পর্যন্ত শিশুসহ পাঁচজন মারা গেছেন। এর মধ্যে আমার বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীও রয়েছে।’
বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মংক্যচিং সাগর বলেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঙ্গলবার বিষয়টি আমাকে অবগত করেছেন। এর আগে কেউ আমাদের এ ঘটনা জানাননি। আমরা এ পর্যন্ত পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি। আমরা বুধবার সিভিল সার্জন ও ঢাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে ছয় সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করেছি। সন্ধ্যার দিকে মেডিকেল টিমটি রওনা করবে। আশা করছি বৃহস্পতিবার তারা সেখানে পৌঁছে চিকিৎসাসেবা দিতে পারবে।’
জেএন/এমআর