চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী ও হালিশহর থানা এলাকায় ১০ জনের সংঘবদ্ধ একটি ভুয়া পুলিশ চক্রের খপ্পড়ে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেকে।
ব্যবসা-বাণিজ্য বা অন্যান্য কাজে যাঁদের লেনদেনের পরিমাণ বেশি, তাঁদেরই গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে দলটি। এরপর সুযোগ বুঝে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিচয় দিয়ে তাঁদের তুলে নেন মাইক্রোবাসে।
টাকাপয়সা, স্বর্ণালংকার, মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে চোখ বেঁধে গাড়ি থেকে নামিয়ে সটকে পড়েন নিজেরা। গেল একমাসেই এভাবে ৪০টিরও বেশি অপহরণ ও পরবর্তীতে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে চক্রটি।
অবশেষে ভুয়া ডিবি পুলিশ দলটির ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে আসল পুলিশ। বুধবার রাতে নগরীর পাহাড়তলী ও হালিশহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাঁদের কাছ থেকে অপহরণের পর ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ছিনিয়ে ১টি মোবাইল, ১টি স্বর্ণের আংটি, নগদ-১০ হাজার ৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- রাকিবুল হাসান রাকিব (২৭), মো. শাহবুদ্দিন প্রকাশ সাইমন (২৬), ওমর বিন কিবরিয়া প্রকাশ রাজ (২৭), মো. সাদমান ফয়েজ প্রকাশ সংলাপ (২৬) ও মো. ইসমাইল হোসেন প্রকাশ বাঁধন (২৬)।
পুলিশ জানায়, গত ২৪ মার্চ সন্ধ্যায় সাগরিকা মোড়ে এ চক্রটির খপ্পড়ে পড়ে এক ভুক্তভোগী। তাকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৩ জন লোক জোরপূর্বক একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।
এরপর তাকে একটি পরিত্যক্ত মুরগির ফার্মের ভিতরে আটকে রাখে। পরে আট থেকে দশ জন তাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে ১টি মোবাইল, মানিব্যাগে থাকা নগদ ১৯হাজার ৮’শ টাকা নিয়ে নেয়।
এছাড়া তার বিকাশ ও নগদের পাসওয়ার্ড নিয়ে সাড়ে ২৯ হাজার টাকা, ২টি স্বর্ণের ও রুপার আংটি, একটি রোলেক্স ঘড়ি ছিনিয়ে নেয়।
পরে ভুক্তভোগী পাহাড়তলী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশি অনুসন্ধানে চক্রটির কয়েকজনের অবস্থান নিশ্চিত হয়। বুধবার রাতে পাহাড়তলী ও হালিশহর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করে টিম পাহাড়তলী।
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গ্রেফতারের তথ্য নিশ্চিত করেন অভিযানে অংশ নেওয়া পাহাড়তলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মনির হোসেন।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরেই হালিশহর ও পাহাড়তলী এলাকায় ডিবি পুলিশ সেজে ভয়ভীতির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলে। পরে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে তার সর্বস্ব লুটে নেয়।
চক্রটির ৫ সদস্যকে গ্রেফতারের পর তাদের হাতেই ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া ভুক্তভোগী অনেকেই থানায় যোগাযোগ করছে। আমরা তাদের মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।
জেএন/পিআর