সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৯০ মিনিট অনেক লম্বা সময়। রিয়াল মাদ্রিদ কিংবদন্তি হুয়ান ‘জুনিয়াতো’ গোমেজের বিখ্যাত এক উক্তি। সেই ৯০ মিনিট আদতে ঠিক কতখানি লম্বা, তা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আরও একবার হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি। দুই দফা এগিয়ে যাওয়ার পরেও বার্নাব্যুতে হতাশই হতে হয়েছে পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের।
ম্যাচের শুরুর একাদশেই চমক রেখেছিলেন সিটিজেন্স কোচ পেপ গার্দিওলা। ডি ব্রুইনাকে ছাড়াই নামিয়েছেন একাদশ। কোচের সেই সিদ্ধান্তের প্রতিদানও দিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েছে পুরোটা সময়। তবে প্রতিপক্ষ যখন রিয়াল মাদ্রিদ, তখন কোনো লিডই নিশ্চিত না। তাই হয়েছে শেষ পর্যন্ত। বার্নাব্যুতে দুই জায়ান্টের হাইভোল্টেজ ম্যাচ শেষ হয়েছে ৩-৩ গোলের ড্র দিয়ে।
বার্নাব্যুতে ম্যানসিটির পরিবেশ কঠিন করতে আগেই উয়েফার অনুমতি নিয়ে ছাদ বন্ধ করে রেখেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। উদ্দেশ্য ছিল স্টেডিয়ামের গর্জন যতসম্ভব বড় করে প্রতিপক্ষের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা। কিন্তু ম্যাচ শুরুর পরপরই ম্যানসিটিই উলটো চাপে ফেলে দেয় স্বাগতিকদের। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই ফাউল করে বসেন রিয়ালের ফ্রেঞ্চ তারকা চুয়ামেনি। বিপদ শুরু সেখানেই।
সরাসরি ফ্রি কিকে মনে রাখার মতোই এক গোল করে বসেন সিটির পর্তুগিজ তারকা বার্নাদো সিলভা। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মাদ্রিদের খেলোয়াররা নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার আগেই যেন পিছিয়ে পড়ল। কিন্তু দলটা যে রিয়াল মাদ্রিদ! চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রাজা বলতে গেলে সাদা জার্সির দলটাই।
নিজেদের রাজকীয় মঞ্চে ফিরে আসতে মাদ্রিদের সময় লেগেছে মোটে ১০ মিনিট। ম্যাচের ১২ মিনিটের মাথায় কামাভিঙ্গার দুর্দান্ত শট সিটি ডিফেন্ডার রুবেন দিয়াজের গায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে। বল জালে জড়ালে সমতায় ফেরে রিয়াল।
মিনিট দুয়েক পর ফের রিয়ালের গোল। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের কাছ থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত এক সলো রান দিয়েছিলেন রদ্রিগো। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে বুদ্ধিদীপ্ত এক আলতো টোকায় এগিয়ে দেন দলকে। এরপরের প্রথমার্ধের বাকি সময়ে বলতে গেলে এককভাবেই আধিপত্য করেছে রিয়াল। বাকিসব বিগ ম্যাচের মতোই এই ম্যাচেও যেন পকেটবন্দী হয়েছিলেন সিটির বড় তারকা আর্লিং হালান্ড।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে আরও ক্ষুরধার আক্রমণ চালিয়েছে ম্যানসিটি। কাউন্টার অ্যাটাকে ভিনিসিয়ুস বাদে কাউকে খুব একটা সুবিধা করতে দেখা যায়নি। সেটাই কাজে লাগিয়েছে ম্যানসিটি। ৫ মিনিটের মধ্যে দুই গোল করে দ্বিতীয়ার্ধে লিড পায় ম্যানসিটি। শুরুতে ফিল ফোডেনের দুরপাল্লার শট। আর খানিক বাদেই জাস্কো ভার্দিওলের আরেক অনবদ্য বাঁকানো শট! দুজনেই গোল পেয়েছেন ডিবক্সের বাইরে থেকে। ৭০ মিনিটে ৩-২ গোলের লিড পেয়ে যায় ইংলিশ ক্লাবটি।
তবে এই লিডও ধরে রাখা হয়নি তাদের। ফেদে ভালভার্দের দুর্দান্ত এক গোল ফের উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছে বার্নাব্যুতে। ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের ভাসানো বলে করেছেন মনে রাখার মতো এক গোল। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় ড্রতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দুই দলকে।
জেএন/এমআর