ঈদের ছুটির মধ্যে হাসপাতালে বেড়েছে দুর্ঘটনাকবলিত রোগীর চাপ। অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) গত দুই দিনে চিকিৎসা নিয়েছে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ৩৮২ জন। এদের মধ্যে অধিকাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত।
শুক্রবার ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রোগীদের ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। যাদের অনেকে ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন।
হাসপাতালটির দায়িত্বরত এক চিকিৎসক জানান, ঈদের দিন চিকিৎসা নিয়েছেন ২৫২ জন, আর আজ শুক্রবার ইতোমধ্যে ১৩০ জন জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ৭৬ জন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত। দুই দিনে ৯৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এ সময় হাসপাতালের বহির্বিভাগও খোলা ছিল সেখানেও প্রায় একশ জন করে রোগী এসেছেন। গত দুই দিন এত রোগী এসেছে চাপ সামলাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই রোগীদের কেউ বাইক দুর্ঘটনার শিকার, কেউ গাড়ি দুর্ঘটনায় বা অন্য কোনো কারণে আহত হয়েছেন। কোনো কোনো রোগীর হাত-পা কেটে ফেলার মত অবস্থাও রয়েছে।
এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ২৫ বছর বয়সী তরুণ আব্বাস আলী জানান, বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু দেখতে গিয়ে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে তার হাত ভেঙেছে। মাথায় হেলমেট না থাকায় মাথায়ও আঘাত পেয়েছেন।
তার পাশে দেখা গেলে মজিদ মিয়াকে। তিনিও সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন, তিনি জানান, একটা বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পেছন থেকে বাইকে ধাক্কা দেয়। এতে পড়ে নিয়ে থুতনি ও ঠোঁট কেটে গেছে, হাতেও আঘাত লেগেছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত এক নার্স জানান, ঈদ-পরবর্তী সময়ে রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। হাসপাতালে আসা একের পর এক রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে খাওয়া ও বিশ্রামেরও সুযোগ থাকে না তাদের। মাত্র ছয় জন নার্স কাজ করছি। এটা রীতিমতো আমাদের ওপর অত্যাচারের মতো।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঈদ ও ঈদ পরবর্তী সময়ে এই হাসপাতালে রোগীর এমনই চাপ থাকে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে আসা রোগীদের মোটরসাইকেল দুর্ঘটনাই বেশি। জরুরি ওয়ার্ডে জায়গা না হওয়ায় অনেককে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে বারান্দায়।
জেএন/এমআর