ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুর অংশের কানাইপুর তেতুলতলা নামক স্থানে বাস-পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নিহত ১৪ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে কানাইপুর হাইওয়ে থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুরের দ্বীপনগর এলাকায় লাশ হস্তান্তর করা হয়।
দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত ৪ সদস্যরা হলেন ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের ছত্রকান্দা গ্রামের বাসিন্দা তারা মোল্লার ছেলে মিলন মোল্লা (৩৫), তার স্ত্রী সুমী বেগম (২৩), দুই ছেলে রুহান মোল্লা (৬) ও আবু স্নান মোল্লা (৩)।
এছাড়া মিলন মোল্লার মা হুবাইয়া বেগম হুরি আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
একই গ্রামের মর্জিনা বেগম (৭০) এবং একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ইউনিয়ন রূপপাতের কুমরুল গ্রামের ইকবাল হোসেনকে (২৮) উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
এদিকে একই দুর্ঘটনায় পার্শ্ববর্তী উপজেলা আলফাডাঙ্গার এক পরিবারের মা মেয়ে ও নাতিসহ তিনজন মারা গেছে। নিহতরা হলেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বেজিডাঙ্গা গ্রামের জাহানারা বেগম (৫৫), সনিয়া বেগম (৩২), নাতি নূরানি (১)।
নিহত অন্যরা হলেন আলফাডাঙ্গা পৌরসভার হিদাডাঙ্গা গ্রামের মনিরা বেগম (৪৮), শুকুরণ বেগম (৮০), কোহিনূর বেগম (৬০)। পিকআপভ্যানচালক কুসুমদি গ্রামের নজরুল মোল্যা (৩০), সদর ইউনিয়নের তবিবুর খান (৬০)।
নিহতদের প্রত্যেকের বাড়ি ভিন্ন উপজেলায় হলেও সবাই পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দা। তারা সবাই জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সরকারি বরাদ্দের ত্রাণের টিন আনতে ফরিদপুর যাচ্ছিলেন।
মিলন ঢাকায় একটি সরকারি অফিসে লিফটম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ঈদের ছুটি শেষের আগে তিনি মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে পিকআপে করে ফরিদপুর থেকে ত্রাণের টিন আনতে ফরিদপুর যাচ্ছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় পুরো পরিবার একসঙ্গে নিঃশেষ হয়ে গেলেন।
করিমপুর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহত ১৪ জনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্বজনদের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়। তবে এর আগে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়।
এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব না হলে দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপ ও যাত্রীবাহী বাসটিকে জব্দ করে হাইওয়ে থানায় রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় ওসি সালাউদ্দিন চৌধুরী।
জেএন/পিআর