জুমার দিনের গুরুত্বপূর্ণ যেসব আমল

অনলাইন ডেস্ক

জুমা’ শব্দের অর্থ এক জায়গায় জড়ো হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। শুক্রবার মসজিদে জোহরের চার রাকাতের পরিবর্তে কাতারবদ্ধ হয়ে দুই রাকাতের যে ফরজ নামাজ আদায় করা হয়, ইসলামের পরিভাষায় সেটিই সালাতুল জুমা বা জুমার নামাজ।

- Advertisement -

জুমার নামাজ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। পবিত্র আল-কোরআনে ‘জুমা’ (জমায়েত) নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা আছে। সেটি ৬২ নম্বর সুরা। তাতে জুমার নামাজের গুরুত্ব বর্ণনা করে আল্লাহ বলছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও কেনাবেচা বন্ধ রাখবে। এ-ই তোমাদের জন্য ভালো; যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)

- Advertisement -google news follower

এই দিনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমলের কথা কোরআন-হাদিসে পাওয়া যায়-

ইসলামে জুমার দিনকে সপ্তাহের সেরা দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেন, দিবসগুলোর মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো জুমার দিন এবং তা আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানিত। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৮৪, তিরমিজি, হাদিস : ১০৮৪)

- Advertisement -islamibank

মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! জুমার দিনে যখন নামাজের আজান দেওয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর যদি তোমরা উপলব্ধি করতে পারো। (সুরা জুমা)

শুক্রবার নিয়ে হাদিসে বর্ণিত বিশেষ নির্দেশনা মেনে চলা উচিত-

# গোসল করা, (বুখারি, হাদিস : ৮৭৭, ৮৭৮, ৮৮০, ৮৯৭,৮৯৮)

# মিসওয়াক করা, (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৯৮, বুখারি, হাদিস : ৮৮৭)

# উত্তম পোশাক পরিধান করা, (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১০৯৭, আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)

# সুগন্ধি ব্যবহার করা, (বুখারি, হাদিস : ৮৮০)

# মসজিদে প্রবেশের পর অন্য মুসল্লিদের ফাঁক করে বা গায়ের ওপর দিয়ে টপকে সামনের দিকে না যাওয়া, (বুখারি, হাদিস : ৯১০, ৮৮৩)

# কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা, (বুখারি, হাদিস : ৯১১)

# সালাতের জন্য কোনো একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট করে না রাখা, যেখানে যখন জায়গা পাওয়া যাবে সেখানেই সালাত আদায় করা, (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৬২)

# নির্ধারিত নামাজ আদায় করা। এমনকি ফরজ সালাতের আগে ও পরে দুই-চার রাকাত করে নফল সালাত আদায় করা, (বুখারি, হাদিস : ৯৩০)

# গায়ে তেল (লোশন) ব্যবহার করা, (বুখারি : ৮৮৩)

# পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন করা, (মুসলিম, হাদিস : ১৪০০)

# মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেঁয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধূমপান না করা, (বুখারি, হাদিস : ৮৫৩)

# ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বসার জায়গা পরিবর্তন করে বসা, (আবু দাউদ, হাদিস : ১১১৯)

# ইমামের খুতবা দেওয়া অবস্থায় দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা, (আবু দাউদ, হাদিস : ১১১০)

# খুতবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা, (আবু দাউদ, হাদিস : ১১০৮)

# এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোনো কিছু না পড়া বা তিলাওয়াত না করা, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৩২)

# ইমামের খুতবার জন্য বের হওয়া থেকে সালাত শেষ করা পর্যন্ত নীরবতা অবলম্বন করা। তবে কাউকে কথা বলতে দেখলে তাকে চুপ করতে বা বারণ করতে বলাও বেহুদা কাজ। (আবু দাউদ, হাদিস : ১১১২)

# বেশি বেশি প্রার্থনা (দোয়া) করা। (বুখারি, হাদিস : ৯৩৫)

উক্ত কাজগুলো যথাযথ পালনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির জন্য এই জুমা ও তার পূর্ববর্তী জুমার মধ্যবর্তী সব গুনাহের কাফফারা হয়ে যাবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩৪৩)

এছাড়া জুমার দিন বেশি বেশি দরুদ পাঠ করার ব্যাপারে রাসুল (সা.)-এর নির্দেশনা রয়েছে। তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কেননা তোমাদের পাঠকৃত দরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)

রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা আল কাহফ পড়বে, তার (ঈমানের) নূর এ জুমা থেকে আগামী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (সহিহ আত-তারগিব, হাদিস : ৭৩৬)

এই দিন বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং দোয়া করা উচিত। হাদিসে এসেছে, ‌জুমার দিনে এমন একটা সময় আছে, যে সময়ে কোনো মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে ভালো কোনো কিছু প্রার্থনা করলে অবশ্যই আল্লাহ তাকে তা দান করবেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৫৩)

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM