নগরজুড়ে এখন নির্বাচনি আমেজ। মূল সড়ক থেকে অলি-গলি, সর্বত্র এখন নৌকা আর ধানের শীষ স্লোগানে মুখর। প্রার্থীরা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন। কাউকে বুকে টেনে নিচ্ছেন, কারো নিচ্ছেন দোয়া। মাইকিং হচ্ছে মোড়ে মোড়ে, ঝুলতে শুরু করেছে পোস্টার-ব্যানার। বেড়েছে প্রেস পাড়ায় ব্যস্ততা। সবমিলিয়ে নির্বাচনি প্রচারণায় এখন সরগরম বন্দরনগরী।
নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা মিলল দুই বিপরীত চিত্র। আওয়ামী লীগের নেতারা সরকারের ১০ বছরের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন ভোটারদের কাছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতারা সরকারের বিরুদ্ধে করছেন নানা অভিযোগ।
চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনে প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন আওয়ামী লীগ, বিএনপি, স্বতন্ত্রসহ বিভিন্ন দলের ১১৪ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে চট্টগ্রাম নগরের ছয়টি আসনে ৬৬ জন প্রার্থী প্রতীক বুঝে নিয়েছেন। নগরের বাইরে উপজেলার ১০টি আসনে ১১৪ জন প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছেন। প্রতীক হাতে পেয়েই কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর ছেলে ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছেন। নওফেলের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টায় হযরত শাহ সুফি আমানত খানের (র.) মাজার জেয়ারতের মধ্য দিয়ে নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেন নওফেল।
এসময় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নগরপিতা আ জ ম নাছির উদ্দীন জয়নিউজকে বলেন, ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ এখন সাংগঠনিকভাবে অনেক শক্তিশালী। আওয়ামী লীগ সরকার গত ১০ বছরে চট্টগ্রামে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করেছে। এ কারণে এ অঞ্চলের মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে অবশ্যই বিজয়ী করবে।
চট্টগ্রাম-১০ (হালিশহর-ডবলমুরিং) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আবদুল্লাহ আল নোমানও নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেছেন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় হযরত শাহ সুফি আমানত খানের (র.) মাজার জেয়ারতের মাধ্যমে তিনি নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করেন।
মাজার জেয়ারত শেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নোমান জয়নিউজকে বলেন, এখনো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি। মামলা আতংকে রয়েছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণা বাধাগ্রস্ত করছে পুলিশ। এসব করে তারা বিএনপিকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। জনগণ ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলেই ধানের শীষকে বিজয়ী করে জুলুমের জবাব দেবে।
নগরের হালিশহর ছোটপুল এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেছেন চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে বিএনপির প্রার্থী ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। গণসংযোগকালে ভোটারদের উদ্দেশে আমির খসরু বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা নির্বাচনে এসেছি। ৩০ ডিসেম্বর ভোটের মাধ্যমে বিএনপি প্রার্থীদের জয়ী করে বিগত দিনে ভোটাধিকার হরণের জবাব দিতে হবে।
জামালখান এলাকার ভোটার নুরুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, এলাকার উন্নয়নের জন্য সৎ, মেধাবী ও যোগ্য প্রার্থীকে জয়যুক্ত করব। এমন প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চাই যিনি গরিব দুঃখী মেহনতী মানুষের জন্য কাজ করবেন। সুখে দুঃখে পাশে থাকবেন।