শতবর্ষী জব্বারের বলীখেলা শেষ হলেও এখনো শেষ হয় নি মেলার আমেজ। শেষ মুহূর্তে মেলা ঘুরে দেখা গেছে কারো হাতে ফুলের ঝাড়ু, কারো হাতে মাটির টব। আবার কেউ কিনছে ঝাটা, মাদুর, পাখা। কেউ বা আবার ব্যস্ত হরেক রকমের ঘর সাজানোর কারুপণ্য কিনতে।
জব্বরের বলীখেলায় শুরু থেকে ছিলো ক্রেতাদের ভিড়। গরমের কারনে সকালে দিকে ক্রেতা কম থাকলেও সন্ধ্যার পর বাড়তে থাকে ক্রেতা। এই কেনাকাটা চলে ভোররাত পর্যন্ত। তিন দিনের বৈশাখী মেলা শেষ শুক্রবার রাতে। তবে শনিবার সকালে রাস্তার উপর বসা অস্থায়ী দোকান পাট সরিয়ে দিলেও ফুটের দোকানগুলো এখনো সরানো হয় নি।
এদিকে শেষমুহূর্তে কেনাকাটার জন্য ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষ।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রথম দিকের তুলনায় পণ্যসামগ্রীর দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। যে ফুল ঝাড়ুর জোড়া আড়াইশ’ টাকা ছিল তা এখন দেড়শ’ টাকায় ঠেকেছে। মাত্র ১০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে ফুলঝাড়ু।
একইভাবে হাতপাখা, মাটির তৈজসপত্র, ফুলদানি, শোপিস, দেবদেবীর প্রতিকৃতি, খেলনা, গহনা, শীতলপাটি, মুড়ি-মুড়কি, মিষ্টান্ন সব কিছুই কম লাভে বিক্রি করে দিচ্ছেন বেপারী, দোকানি ও উদ্যোক্তারা।
এদিকে দাম রাখার কারন জানতে চাইলে ঢাকা থেকে মৃৎশিল্প সামগ্রী নিয়ে আসা শরিফুল জানান, এগুলো ভঙ্গুর পণ্য। পরিবহনের সময় অনেক জিনিস ভেঙে যায়। তাই কেনা দাম পেলেও বিক্রি করে দিচ্ছি। নয়তো উল্টো গাড়িভাড়া গুণতে হবে।
দেখা গেছে, হাজারখানেক অস্থায়ী দোকান বানিয়ে ক্ষুদ্র বিক্রেতারা বাঁশ ও বেতের আসবাব, ঝাড়ু, ঝাটা, মাদুর, পাটি, পাখা, পাপোশ, কুলা, ঢালা, মোড়া, হরেক রকমের ঘর সাজানোর কারুপণ্য, নানা ধরনের টব, শিশুদের খেলনাপাতি, হাড়িপাতিল, দা-বটি-খুন্তি, সাজের গহনা বিভিন্ন গাছের চারা নিয়ে বসেছেন। কাঠের তৈরি খাট, আলমিরা, আলনাসহ আরও নানা আসবাবপত্রও আছে বিক্রির তালিকায়।
গরমে হাঁসফাঁস করলেও বৃষ্টিপাত না হওয়ার খুশি বিক্রেতারা। একই সঙ্গে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেচাকেনাও ভালো হয়েছে। কয়েকজন বিক্রেতা জানান, মেলার সময় কয়েকদিন বাড়ালে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা দোকানিরা উপকৃত হবে।
রাত সাড়ে নয়টায় মেলায় আসা নাজরিন সুলতানা জানান, এসেছি ঘরের জন্য কিছু জিনিস কিনবো। ঘর সাজানোর জিনিসও কিনতে হবে। গতকালও মেলা এসেছিলাম। কিছু মাটির টব নিয়েছি।
এদিকে মেলার কমিটির সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতেই আনুষ্ঠানিক মেলা শেষ হয়েছে। এরপর অলিগলিতে, সুবিধাজনক স্থানে যানবাহন চলাচল ও পথচারীদের দুর্ভোগ সৃষ্টি না করে দূরদূরান্ত থেকে আসা বেপারীরা নিজ দায়িত্বে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করতে পারবেন।
জেএন/হিমেল/এমআর