বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শারীরিক কিছু জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিটে তিনি হাসপাতালে পৌঁছান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর গুলশান-২ নাম্বারের ৭৯ নাম্বার রোডের ১ নম্বর বাসভবন ফিরোজা থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর গত ১১ জানুয়ারি বাসায় ফিরেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
এর আগে গত বছরের ৯ আগস্ট রাতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নেতৃত্বে গত বছরের ২৬ অক্টোবর লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের যকৃতে ‘ট্র্যান্সজাগুলার ইন্ট্রাহেপেটিক পোরটোসিসটেমিক শান্ট (টিপস)’ প্রক্রিয়ায় অস্ত্রোপচার করা হয়।
টিপস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তার দুটি রক্তনালীর মধ্যে একটি নতুন সংযোগ তৈরি করেন চিকিৎসকরা।
গত বছরের ১০ জুন রাত পৌনে তিনটার দিকে খালেদা জিয়াকে জরুরি ভিত্তিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তখন প্রায় দুই সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ২৪ জুন বাসায় ফেরেন তিনি। এর ঠিক দেড় মাস পর ৯ আগস্ট আবারও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
‘বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং বাড়িতে বসে চিকিৎসা নিতে হবে’- এ দুই শর্তে অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তিতে রয়েছেন খালেদা জিয়া।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর’-এর ধারা-৪০১ (১)-এর ক্ষমতাবলে সরকারের নির্বাহী আদেশে প্রথমবারের মতো শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পান খালেদা জিয়া।
ওই বছরের সেপ্টেম্বরে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়। এরপর দফায় দফায় বাড়ে তার মুক্তির মেয়াদ। সবশেষ গত ২১ মার্চ শর্ত অপরিবর্তিত রেখে আরও এক দফা তার দণ্ড স্থগিত করে অষ্টমবারের মতো মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনে সায় দেয় সরকার।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া অন্তর্বর্তীকালীন মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ ছিলেন। এরমধ্যে তিনি করোনাভাইরাসেও আক্রান্ত হন। তিনি আর্থারাইটিস, ডায়াবেটিস ও চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত।
রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়।
জেএন/পিআর