নাফ নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্ত এলাকা থেকে ১২ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণের ৩৬ ঘন্টা পর ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২ মে) সন্ধ্যা ৭টার পর তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। রাত ৮টার দিকে ১২ বাংলাদেশিকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অপহরণের শিকার টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকার আব্দুল জলিল নামের এক যুবক।
তিনি বলেন, ‘আরকান আর্মি আমাদেরকে নাফনদীর বাংলাদেশ অংশ থেকে ধরে নিয়ে গেছিল। জাতীয় পরিচয়পত্র চেক করে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর দুপুরের দিকে ছেড়ে দিতে চেয়েছিল।
কিন্তু সীমান্তের পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে সন্ধ্যা ৭টায় সীমান্তের নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশের বালুখালীর একটি এলাকায় ১২ জনকে ছেড়ে দিয়ে তারা চলে যায়। আমরা সবাই সুস্থ আছি।’
গত বুধবার (১ মে) সকাল ৮টার দিকে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী রহমতেরবিল সীমান্তে নাফ নদী থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়।
অপহৃতদের ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘জেলেরা নাফ নদীর বাংলাদেশ অংশে মাছ ধরতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাদের ছেড়ে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরাকান আর্মির সদস্যরাই আমাদের জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল। কারণ রহমতেরবিল সীমান্তে মিয়ানমার অংশে এখন সে দেশের কোনো সরকারি বাহিনী নেই। যারা ছিল তারা সবাই সংঘাতের সময় পালিয়ে বাংলাদেশে চলে এসেছিল। এখন রহমতেরবিল সীমান্তের ওপারে মিয়ানমানের ওই এলাকাটি আরাকান আর্মির দখলেই আছে।’
এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে এম গফুর উদ্দিন খবর পেয়েছেন আরাকান আর্মিই জেলেদের নিয়ে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।
জেলেরা হলেন, পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল এলাকার হোসেন আলীর ছেলে জানে আলম (৩৫), মৃত আবদুস ছালামের ছেলে আব্দুর রহিম (৪০), মৃত জালাল আহমদের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম (৩৭) ও সাইফুল ইসলাম (৩০), মৃত আলী আহমদের ছেলে আয়ুবুল ইসলাম (৩০), আবু তাহেরের ছেলে শাহীন (২০), গৌজঘোনা এলাকার আলী আহমদের ছেলে আবদুর রহিম (৫২), পুটিবনিয়া এলাকার মৃত মিয়া হোসেনের ছেলে ওসমান গণী (৩০), মৃত আবুল শামার ছেলে ওসমান (৩৫), আয়ুব ইসলামের ছেলে আবুল হাশিম (৩৫), টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাবিল এলাকার রোমান আলীর ছেলে আব্দুল জলিল (৩২) ও দৈংগ্যাকাটা এলাকার হোসাইন আহমদ (৫৫)।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর হোসেন বলেন, যেহেতু সীমান্ত এলাকা থেকেই অপহরণের শিকার হয়েছে তারা, তাই বিষয়টি বিজিবিকে জানানো হয়েছে এবং তাদেরকে উদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে।
আরাকান আর্মির নাম সরাসরি না বললেও তানভীর হোসেন বলেন, তিনিও শুনেছেন মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনই জেলেদের অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছিল।
জেএন/পিআর