বৃষ্টি, বজ্রপাতের পর দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদীতে অল্প পরিমাণে নমুনা ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ।
মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে ভাটা শেষে হালদা নদীর উরকিরচর, মইশকরম এলাকায় ডিম পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন হালদা স্বেচ্ছাসেবী ও পরিবেশবাদী সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী।
সন্ধ্যার দিকে পূর্ণাঙ্গভাবে ডিম ছাড়তে পারে বলে আশা করছেন হালদা গবেষক ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
খবর ছড়িয়ে পড়লে ইতিমধ্যে নদীতে ভিড় করছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।
এলাকাবাসী জানান, নদীর নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় রুই জাতীয় মা মাছেরা ইতিমধ্যেই বিচরণ শুরু করেছে। মঙ্গলবার কার্প জাতীয় মা মাছ স্বল্প পরিসরে ডিম ছেড়েছে। জেলেরা ১১টি নৌকার মাধ্যমে ডিম সংগ্রহ করছেন।
তারা জানান, প্রতিটি নৌকায় গড়ে দুই থেকে আড়াই বালতি করে ডিম সংগ্রহ করেছেন। চলতি মাসের ছয় মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত হালদায় কার্প জাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার অমাবস্যার জোঁ চলছে বলেও জানান তারা।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা লাভলী বলেন, ‘সংগ্রহকারীরা ডিম সংগ্রহ শুরু করেছেন। হ্যাচারিগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রতিটি নৌকায় গড়ে ২ থেকে ২.৫ বালতি করে ডিম সংগ্রহ পাওয়া গেছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, আজ (মঙ্গলবার) ভোরে কিছু নমুনা ডিম ছেড়েছে। নমুনা ডিম হলেও পরিমাণে বেশি। আশা করছি, সন্ধ্যার দিকে কিংবা রাতে বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হলে বড় মাছ পূর্ণাঙ্গভাবে ডিম ছেড়ে দেবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হালদা রিভার রিচার্স ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক মো. মনজুরুল কিবরিয়া জানান, মঙ্গলবার (৭ মে) ভোরে হালদা নদীর আজিমের ঘাট থেকে অঙ্কুরীঘোনা পর্যন্ত এলাকায় মা মাছ বিক্ষিপ্তভাবে নমুনা ডিম ছেড়েছে।
তিনি বলেন, এখন আবহাওয়া ভালো। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলও আছে। পানির কোয়ালিটিও ভালো। ডিম ছাড়ার জন্য এটা সুন্দর পরিবেশ।
আশা করছি, আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যার দিকে পূর্ণাঙ্গভাবে ডিম ছাড়তে পারে। ডিম সংগ্রহের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মৎস্য বিভাগ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিচ্ছে।
উল্লেখ্য : রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে সরকার ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করে। গত বছর হালদা থেকে ১৫ হাজার কেজি ডিম সংগৃহীত হয়েছিল।
চলতি বছরের ৬ থেকে ১০ মে পর্যন্ত হালদায় কার্পজাতীয় মাছের ডিম ছাড়ার অমাবস্যার জো চলছে।
জেএন/পিআর