চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট)’র দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু পর আন্দোলনের জেরে দীর্ঘ ১৯ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়।
আজ রবিবার থেকে তা পুনরায় শুরু হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আজ ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু দাবি মেনে নেয়ায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ থেকে ক্লাসে ফিরেছি। শিক্ষার্থীরা আশা করছেন এখন থেকে চুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম সচল থাকবে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল বেলা সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২) ও দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১)।
এর জের ধরে ওইদিন থেকে শিক্ষার্থীরা ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন। আন্দোলন চলাকালে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আগুন দেন শাহ আমানত পরিবহনের তিনটি বাসে। পরে ঘাতক বাসের চালককে পুলিশ গ্রেফতার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়।
২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সেই বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা চুয়েটের মূল ফটকের সামনে সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন। এরপর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। বৈঠক শেষে রাত সাড়ে ১১টায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এ সময় তারা জানান, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসচালককে গ্রেপ্তার করার দাবি ছিল। সেই দাবি পূরণ হয়েছে। ক্ষতিপূরণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তহবিল গঠন করবে, যেখানে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, সব শিক্ষক ও কর্মকর্তা- কর্মচারীরা সহযোগিতা করবেন।
তাছাড়া চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অপ্রশস্ত হওয়ায় বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই সড়কটি পর্যন্ত প্রশস্ত করার কাজও দ্রুত শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হবে বলে আশ্বাস পেয়েছেন তারা। এসব দাবি পূরণ কিংবা আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ায় পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে ২৬ এপ্রিল শুক্রবার বিকেল ৪টায় সিন্ডিকেট সদস্যদের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকলেও শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্থীদের হলে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়।