মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হওয়ার আগেই কাউকে কারাগারের কনডেম সেলে রাখা যাবে না বলে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত সেই রায় ২৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেছেন।
বুধবার (১৫ মে) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
গতকাল (১৪ মে) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এর আগে ১৩ মে মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিদের কনডেম সেলে বন্দি রাখা অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে বলা হয়, কনডেম সেলে কোনো আসামিকে রাখা দুই বার সাজার সামিল। আদালত কারা কর্তৃপক্ষকে দুই বছরের সময় দিয়ে বলে, এই সময়ের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আসামিদের ফাঁসির সেল থেকে সাধারণ সেলে রাখতে হবে। তবে, বিশেষ ক্ষেত্রে দণ্ডিত কোনো আসামি যদি কোনো সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হন এবং তাকে অন্যদের সঙ্গে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ তাহলে সেই ব্যক্তিকে কনডেম সেলে রাখা যাবে ওই ব্যক্তির বক্তব্য শুনে।
রায়ে আদালত আরও বলেন, ‘কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড আপিল বিভাগ এবং রিভিউয়ের (রায় পুনর্বিবেচনা) পরও বহাল থাকলে এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদন নাকচ হয়ে গেলেই কেবল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত বলে ধরে নিতে হবে এবং তখন থেকে দণ্ডিত ব্যক্তিকে ওই বিশেষ সেলে রাখা যাবে।’
বিভিন্ন কারাগারের কনডেম সেলে থাকা তিন ব্যক্তির পক্ষে করা রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে ২০২২ এর ৫ এপ্রিল হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে আসামিকে কারাগারের কনডেম সেলে রাখার বৈধতা নিয়ে রুল দেয়। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় হয়।
হাইকোর্টের রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে যেহেতু আমরা আপিল ফাইল করব তাই এটা (রায়) স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। না হলে রায় নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে।’
রায়ের সকল নির্দেশনা ও পরামর্শ স্থগিতের আবেদন করা হয়েছে বলে গতকাল জানান তিনি।
জেএন/এমআর