কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তপথে মায়ানমার হয়ে দেশে ঢুকছে বিদেশি জি থ্রি রাইফেল, শুটার গান, কার্তুজসহ ভারী অস্ত্র। নানা কৌশলে এর চালান হাতবদল করছে একাধিক চক্র।
পরে টাকার বিনিময়ে এসব অস্ত্র চলে যায় সারাদেশে উঠতি মাস্তান, পেশাদার সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ছিনতাইকারী এমনকি কিশোর গ্যাংয়ের হাতে।
পুলিশ বলছে, একটি সংঘবদ্ধ অস্ত্র ব্যবসায়ী চক্র মায়ানমার থেকে অস্ত্র এনে বাংলাদেশের অপরাধী চক্রের হাতে পৌঁছে দিচ্ছে।
এদিকে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদনে ভিত্তিতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযানে জোর দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল বুধবার (১৫ মে) উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তপথে দিনব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। মায়ানমার থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আ বিদেশি জি থ্রি রাইফেল, শুটার গান এবং ৯২ রাউন্ড গুলিসহ অস্ত্র চোরাচালান চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, উখিয়ার মাদারবুনিয়া এলাকার মো. ছৈয়দের ছেলে মোস্তাক আহম্মদ, মহেশখালীর মাঝের ডেইল এলাকার আনজু মিয়ার ছেলে রবিউল আলম, মাদারবুনিয়া এলাকার মৃত নুর নবীর ছেলে কাশেম প্রকাশ মনিয়া, মোস্তাক আহম্মদের মেয়ে লতিফা আক্তার এবং মহেশখালীর নতুন বাজার এলাকার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে বেলাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) বিকাল সাড়ে ৩টায় কক্সবাজার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাহাফুজুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, মায়ানমার থেকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র এবং গুলি বাংলাদেশে এনে অপরাধী চক্রের কাছে হস্তান্তর করছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে উখিয়ার মাদারবুনিয়া এলাকায় গহীন পাহাড়ে দুর্ধর্ষ ডাকাত মোস্তাকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ২টি ওয়ান শুটার গান (এলজি), ৭৭ রাউন্ড গুলি এবং ২৪টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, এছাড়াও টেকনাফ এলাকা থেকে বেলাল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে টেকনাফের শাপলাপুর এলাকায় সমুদ্র তীরবর্তী ঝাউবাগানের বালুর নিচে রাখা ১টি জি থ্রি রাইফেল, ১টি ম্যাগজিন ও ১৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
এসপি আরও জানান, ডাকাত মোস্তাক একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র, মাদক মামলার আসামি এবং তার বিরুদ্ধে ৪টি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। অস্ত্র ব্যবসায়ী রবি আলমের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে উখিয়া ও টেকনাফ থানায় অস্ত্র আইনে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। চক্রের বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।
এর আগে বুধবার (১৫ মে) কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন লাল পাহাড়ে রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় অভিযান চালায় র্যাব। এসময় প্রায় ৬ ঘন্টার অভিযানে অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট সেলসহ দুই সন্ত্রাসীকে আটক করতে সক্ষম হয় র্যাব।
জেএন/পিআর
