দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর শ্বাসনালিতে অস্ত্রোপচার করে বাইন মাছ বের করেছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের চিকিৎসক সহকারী অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, রোগীকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। অবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ দেখে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শ্বাসনালি কেটে বাইন মাছটি বের করা হয়। এরপর রোগী সুস্থ হলে ৭-৮ দিন পর তার শ্বাসনালিতে বসানো টিউব অপসারণ করি। তারপরও তাকে পর্যবেক্ষণের জন্য এখনো ভর্তি রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, বরগুনার বেতাগী উপজেলার কেওড়াবুনিয়া এলাকার জমাদ্দার বাড়ির বাসিন্দা কৃষক সিদ্দিক জমাদ্দারের ছেলে দশম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল কাইউম গত ২৭ এপ্রিল বিকেলে বাড়ির পাশের খালে মাছ ধরতে যায়। সন্ধ্যায় মাছের জাল তুলতে গিয়ে হঠাৎ খালের পানিতে ডুবে যায় কাইউম। এ সময় তার হাতে থাকা বাইন মাছটি ছুটে গিয়ে মুখের মধ্যে চলে যায়।
আব্দুল কাইউম বলেন, নতুন খাল খনন করায় সেখানে গভীরতা বেশি হওয়ায় ঠাঁই পাচ্ছিলাম না। এর মাঝেই মাছটি হাত থেকে ছুটে গেলে আমি মুখ খুলে ডুব দিই। আর তখনই মাছটি আমার গলার মধ্যে ঢুকে যায়। এরপর কোনোভাবে আমি খাল থেকে পাশের রাস্তায় উঠতে পারলেও শ্বাস নিতে পারছিলাম না। এ সময় আমার খালা ও চাচাতো বোন আমাকে উদ্ধার করে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন আমাকে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে তারা শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এখানে ওইদিন রাত ১০টার দিকে অপারেশনে নিয়ে রাত ১টার দিকে আমাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করেন।
হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. মোস্তফা কামাল বলেন, রোগীর অক্সিজেন মাস্ক লাগানোর পরও শ্বাসকষ্ট কমছিল না। রোগীর বাবা জানান গলায় বাইন মাছ চলে যাওয়ার কথা। শুরুতে গলা চেক করলেও কোথাও কোনো মাছের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে শ্বাসে মাছের আঁশটে গন্ধ ছিল। রোগীর অবস্থা খারাপ থাকায় এক্সরে করার সুযোগ না থাকলেও নানা লক্ষণে আমরা বুঝতে পারি মাছটি শ্বাসনালিতে চলে গেছে। পরে সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শ্বাসনালি কেটে বাইন মাছটি বের করা হয়।
তিনি আরও বলেন, রোগী বর্তমানে সুস্থ হলেও আরও কিছুদিন আমরা পর্যবেক্ষণ করবো।
জেএন/এমআর