চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার তিনদিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় তার পরিবারের সদস্য ও নেতাকর্মীরা খুবই উদ্বিগ্ন। ইতোমধ্যে নিখোঁজের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
কালীগঞ্জ সরকারি নলডাঙ্গা ভূষণ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় রোড সংলগ্ন এমপির বাস ভবন ও জলীয় কার্যালয়ে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নেতার নিখোঁজের সংবাদ শোনার পর দলীয় নেতাকর্মীরা দুপুর থেকেই তার বাড়ির সামনে অবস্থান করেছেন। সবার মাঝেই হতাশা ও চিন্তার আভাস লক্ষ্য করা গেছে। তার পরিবারের কেউই কালীগঞ্জের বাসায় নেই। পরিবারের সবাই ঢাকায় রয়েছেন।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবার পর পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগর এলাকায় বন্ধু গোপালের বাড়িতে উঠেছিলেন তিনি। সেখান থেকেই এমপি নিখোঁজ হয় বলে জানা গেছে। নিখোঁজ হওয়ার পর বন্ধু গোপাল পশ্চিমবঙ্গের বরাহনগর থানায় মিসিং ডায়েরি করেছেন।
রোববার (১৯ মে) দুপুরে বিষয়টি জানাতে এমপি আনারের স্ত্রী ও কন্যারা ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীকেও বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে বলে সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ নিশ্চিত করেন।
ভারত থেকে এমপির ভাতিজা সাইমন বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, চাচার সন্ধানে শনিবার ভারতে এসেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত চাচার (এমপি আনার) কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সহায়তায় তার অবস্থান জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুর রউফ বলেন, গত ১১ মে শনিবার দর্শনার গেদে সীমান্ত দিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারত যান এমপি আনার। সেখানে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বিধাননগর এলাকায় বন্ধু গোপালের বাড়িতে ওঠেন।
তিনি আরও বলেন, ১৩ ও ১৪ মে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় সংসদ সদস্যের। তার পরদিন থেকে মোবাইল ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে আর কোনো যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।
কালীগঞ্জের পৌর মেয়র আশরাফুল আলম বলেন, এমপি ভারত যাওয়ার পর থেকে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। আমিও তার সাথে কোনো যোগাযোগ করিনি। নিখোঁজের সংবাদ পাওয়ার পর পুলিশ সুপারের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়েছে। এছাড়াও প্রশাসনের বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তিনি কোথায় আছেন, তার সাথে কী ঘটেছে আমরা কিছুই জানতে পারিনি। তবে পরিবারের লোকজন খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ভারতে গেছেন।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম উল-আহসান বলেন, এমপি আনার নিখোঁজ হবার সংবাদ জানতে পারে পরিবার থেকে আমাদেরকে জানানো হয়েছে। তিনি বেনাপোল বর্ডার হয়ে ভারতে যান। সেখানে যাবার পর হঠাৎ করে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এমপি যে বন্ধুর বাসায় উঠেছিলেন তিনিও সেখানে একটা মিসিং ডায়েরি করেছে। যেহেতু ঘটনা ভিন্ন রাষ্ট্রের তাই ঘটনাটি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ঢাকার টিম এটা নিয়ে কাজ করছেন। ভারতের পুলিশও বিষয়টি নিয়ে খুবই আন্তরিকভাবে দেখছেন।
জেএন/এমআর