কলকাতার নিউটাউনে পরিকল্পিত ও নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। সঞ্জিভা গার্ডেন নামে বিলাসবহুল একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি। এরপর মরদেহটি টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে ফেলে আসা হয় অজ্ঞাত স্থানে। এখন পর্যন্ত যার হদিস পাওয়া যায়নি।
এমপি আনার খুনের ঘটনায় বাংলাদেশিরাই জড়িত বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তারা বলছেন, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। পূর্ব শত্রুতার জেরে হত্যা করা হয়েছে তাকে। ঘটনাটির সঙ্গে বাংলাদেশিরাই জড়িত।
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি প্রধানের দেওয়া তথ্যমতে— এমপি আনার যে ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন; সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দফতরের কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার রায়ের। তবে তার কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান শাহিন। তিনিই ওই ফ্ল্যাটে আনারের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কি না— তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশের তথ্য বলছে— আখতারুজ্জামান শাহিনের বাড়িও ঝিনাইদহে। আনার হত্যার সময় তিনি ভারতে অবস্থান করছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, যে ফ্ল্যাটে আনার খুন হন; সেখানে আখতারুজ্জামানও ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্টধারী এই ব্যক্তি আনার খুনের পর নেপাল, দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছেন। সূত্রমতে— গত ২০ মে ভিসতারা এয়ারে দিল্লি থেকে আখতারুজ্জামান নেপালের কাঠমান্ডু চলে যান। পরের দিন ফ্লাই দুবাইয়ে করে তিনি দুবাই চলে যান। তার পরবর্তী গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র বলে জানা গেছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন— শিলাস্তিকে হানি ট্র্যাপ হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। এরইমধ্যে শিলাস্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। সূত্র বলছে, শিলাস্তি রহমান এমপি আনার খুনের মূল পরিকল্পনাকারী আখাতারুজ্জামানের বান্ধবী। তার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
কলকাতার একটি সূত্র জানায়, যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে, ১৩ মে সেখানে দুজন পুরুষ ও একজন নারী প্রবেশ করেন। একদিন অবস্থানের পর ফ্ল্যাট থেকে তারা বের হয়ে আসেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীই শিলাস্তি রহমান। ১৩ মে তিনি আমানুল্লাহ ও এমপি আনারের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢুকে থাকতে পারেন।
ঢাকার ডিবি সূত্রও বলছে, তাদের ধারণা ওই নারীই শিলাস্তি রহমান। কারণ তিনি ১৫ মে বিমানে দেশে ফেরেন। তার সঙ্গে দেশে ফেরেন মূল কিলার আমানুল্লাহ।
ধারণা করা হচ্ছে, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান শাহীন এমপি আনারকে কলকাতা নিতে এই তরুণীকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। কারণ সব পরিকল্পনা করে শাহীন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও শিলাস্তি থেকে যান কলকাতায়।
জেএন/এমআর