সরকারের দেওয়া স্বল্প সুদে ঋণ ও অন্যান্য সুবিধা প্রবাসীদের কাছে পৌঁছাতে প্রচার বাড়ানোর সুপারিশ করেছে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি।
এ ছাড়া আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে অ-আর্থিক প্রণোদনার ব্যবস্থা করা যায় কিনা, তা নিয়ে আলোচনা করেছে কমিটি। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবাসী আয় বাড়ানোর জন্য রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের অ-আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর মধ্যে রয়েছে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী স্থায়ীভাবে স্বদেশে ফিরে এলে দেশে তাঁর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি সেবা প্রদানকারী অফিসে অগ্রাধিকার দেওয়া।
দেশে অবতরণকালে বিমানবন্দরে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর যথাযথ অভ্যর্থনা নিশ্চিত করা এবং ইমিগ্রেশন, কাস্টমস ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে বিশেষ ডেস্ক স্থাপন।
রেমিট্যান্স পাঠানো ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা।
রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বাংলাদেশের যে কোনো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তিতে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া।
প্রতিবেদনে আরও কিছু সুবিধার কথা উল্লেখ করা হয়। যেমন– রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর সন্তানদের জন্য সরকারি, বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা ব্যবস্থা প্রচলন, তাদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়নের ফি কমানো, পাসপোর্টসহ দূতাবাসে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া।
কমিটির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, এম এ মান্নান, এ কে আব্দুল মোমেন, আহমেদ ফিরোজ কবির, আবুল কালাম আজাদ ও রুনু রেজা।
অর্থ বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রবাসী আয় দেশের অর্থনীতিতে প্রায় তিন দশক ধরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বর্তমান সরকারের ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ের উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ সময়ে গড়ে প্রতিবছর প্রবাসী আয় এসেছে ১৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এতে বলা হয়, রেমিট্যান্স আনার ক্ষেত্রে সরকারের নীতি-সহায়তার ফলে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি সরকারের গৃহীত নীতি-সহায়তার কার্যকারিতার প্রমাণ। এ থেকে প্রতীয়মান হয়, সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ধীর হয়ে যাওয়া প্রবাসী আয়ের গতি বৃদ্ধি করতে নতুন নীতি-সহায়তা প্রদান করলে তা ফলপ্রসূ হতে পারে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান আর্থিক সুবিধার পাশাপাশি কিছু অ-আর্থিক বা নন-ফাইন্যান্সিয়াল সুবিধা দেওয়া হলে তা রেমিট্যান্স প্রেরণকারী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এটি ভবিষ্যতে তাদের অধিক হারে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে পারে। সমকাল