ফেসবুকে বন্ধুত্বের নামে প্রথমে অপহরণ পরে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেয়ার হুমকির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
প্রতারকচক্র ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে নগদ টাকা, মোবাইলসহ দামি মালামাল।
লোকলজ্জার ভয়ে অনেকেই প্রতারণার শিকার হওয়ার পরেও পুলিশের দ্বারস্থ হয়না। আবার সর্বস্ব হারিয়ে হাতে গোনা কয়েকজন এ প্রতারক চক্রের উচিত বিচার দাবিতে পুলিশের কাছে মুখ খোলে।
সম্প্রতি চট্টগ্রাম নগরীর আতুরার ডিপো এলাকায় এসে সংঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্রের খপ্পড়ে পড়েছে এক প্রবাসী যুবক।
বিদেশ থেকে ফেসবুকে পরিচিত বান্ধবীর সাথে দেখা করতে গিয়ে চক্রের হাতে অপহরণ হয়। এরপর দামি মোবাইল, স্বর্ণ ও মুক্তিপনের টাকা দিয়েই ছাড়া পান ভিকটিম।
অবশেষে ঘটনাটি পুলিশকে জানালে রবিবার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ৭টায় নগরীর বায়েজিদের শান্তিনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য মো. ইমরান (২৪)কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার ইমরান নেত্রকোণা আটপাড়া কলমন্দা শহিদের বাড়ীর ইসমাইলের ছেলে। থাকতেন চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন আতুরার ডিপো বনানী আবাসিকের ৫নং রোড সেলিমের ভাড়া বাসায়।
থানা সুত্রে জানা গেছে, ভিকটিম প্রবাসে থাকাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক নারীর সাথে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে।
গত ১৫ মে ভিকটিম দেশে আসেন। এখবর প্রতারক চক্রের নারী সদস্যটি জানতে পেরে তার জন্য কসমেটিক আনতে বলেন এবং দেখা করতে বলেন।
গত ২৪ মে বিকাল ৫ টায় নগরীর আতুরার ডিপো এলাকার নবাব বিরানি হাউজের সামনে ওই নারীর সাথে দেখা হয় প্রবাসীর।
পরবর্তীতে ওই নারী ভিকটিমকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে অপহরণ করে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন আমিন টেক্সটাইল জামে মসজিদের উত্তর পাশ্বে জিএম বাংলো পাহাড়ের উপরে নিয়ে যায়।
সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতারক চক্রের ৭/৮ জন সদস্য তাকে আটক করে তার কাছ থেকে একটি আইফোন, স্মার্ট ওয়াচ, ১৫০০ দেরহাম, ১০ হাজার রুপিয়া, নগদ ৫ হাজার টাকা, এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, বিকাশের মাধ্যমে ৩২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
পরে ভিকটিম বায়েজিদ বোস্তামী থানায় এসে বিস্তারিত বর্ণনা করে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার সুত্র ধরেই রবিবার সকালে বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন শান্তি নগর, ১নং রোড, ওয়ান প্রপার্টিজ, গফুর ইনচার্জের বাড়ী সামনে অভিযান চালায় টিম বায়েজিদ। অভিযানে গ্রেফতার হয় প্রতারক ইমরান।
তার কাছ থেকে আইফোন, ১৫০০ দেরহাম, ইন্দোনেশিয়ার ১১ হাজার রুপিয়া উদ্ধার করা হয়।
আজ সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা।
তিনি জানান, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহরনের ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ইমরান।
তাছাড়া প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের বিষয়েও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে পলাতকদের ধরতে অভিযান চলমান বললেন ওসি।
জেএন/পিআর