আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ব্যবসায়িক নথিপত্রে তথ্য গোপনের অভিযোগে করা মামলায় নিউইয়র্কের একটি আদালত এ রায় দেন।
মূলত ওই মামলায় আনা ৩৪টি অভিযোগের সবগুলোতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন সাবেক রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট। আদালতের এই রায়ের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো বর্তমান বা সাবেক কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হলেন।
শুক্রবার (৩১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসায়িক নথিপত্রে তথ্য গোপনের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১১ জুলাই এ মামলায় ট্রাম্পের সাজা ঘোষণা করা হবে। সাজায় সাবেক এই কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্টের কারাদণ্ড হতে পারে। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাকে জরিমানা করার সম্ভাবনাই বেশি।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রে আর কয়েকমাস পরই অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। আর এর মধ্যেই মামলায় দোষী প্রমাণিত হলেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে ৩৪টি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল, তার প্রতিটিতেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
সংবাদমাধ্যম বলছে, আগামী নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও একবার প্রেসিডেন্ট হওয়ার দৌড়ে সামিল হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে তিনি লড়বেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে। তবে নির্বাচনের পাঁচ মাস আগে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় চরম অস্বস্তিতে পড়লেন ট্রাম্প।
অবশ্য বৃহস্পতিবার আদালত থেকে বেরিয়েই যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, ‘এই রায় লজ্জাজনক। সম্পূর্ণ মিথ্যা ও প্রভাবিত। আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের কাছ থেকেই আসল রায় পাওয়া যাবে।’
উল্লেখ্য, পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এই সম্পর্ক যাতে ফাঁস না হয়ে যায়, সেজন্য ওই পর্নতারকাকে মোটা অংকের ঘুষ দিয়েছিলেন তিনি।
পরে আদালতে যান ওই পর্নতারকা। ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্কের বিবরণ থেকে শুরু করে ঘুষের কথা জানান তিনি। অবশেষে আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঘুষকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত করল।
আদালত ছয় সপ্তাহ ধরে স্টর্মি ড্যানিয়েলস-সহ ২২ জন সাক্ষীর কাছ থেকে সাক্ষ্য শুনেছেন। এই পর্ন তারকার দাবি, ২০০৬ সালে ট্রাম্প তার সঙ্গে ‘সেক্স’ করেছিলেন। যখন ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য লড়ছিলেন তখন তিনি যেন এ কথা ফাঁস না করে দেন সেজন্য তাকে ঘুষ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ঘুষের অর্থের কথা গোপন করতে তিনি ভুল ব্যবসায়িক তথ্য দিয়েছেন। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি অপরাধমূলক অভিযোগ আনা হয়েছে। এর সবগুলোতেই তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত।
জেএন/এমআর