কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে পণ্যবাহী একটি ট্রলারে মিয়ানমার থেকে গুলি করা হয়েছে। এতে কোনো হতাহত হয়নি। তবে ট্রলারটির বিভিন্ন স্থানে সাতটি গুলি লেগেছে।
শনিবার দুপুর ১টার দিকে নাফ নদীর বদরমোকাম মোহনায় নাইক্ষ্যংদিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুর রশিদের মালিকাধীন পণ্যবাহী ট্রলারটি সেন্টমার্টিন যেতে না পেরে টেকনাফ ফিরে এসেছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার সময় নাফ নদীর মাঝপথে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী ভর্তি একটি ট্রলারকে মিয়ানমার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটি দ্বীপে আসতে পারেনি। এতে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রায় সাড়ে ১০ হাজার মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় সংকট দেখা দিতে পারে। এছাড়া এ ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তাই এ নৌপথে ট্রলার চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও বিজিবির টহল জোরদার করার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এর আগে বুধবার রাতে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে বাংলাদেশের নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ওপর গুলি ছোড়া হয়। ওই এলাকাটি বর্তমানে আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে বলে জানা গেছে। এই গোষ্ঠীর সদস্যরাই গুলি ছুড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, শনিবার টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া খাল থেকে পণ্যসামগ্রী ভর্তি করে ‘এসবি রাফিয়া’ ট্রলারটি চারজন মাঝিসহ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেয়। মাঝপথে পৌঁছালে মিয়ানমারের নাইক্ষ্যংদিয়া থেকে ট্রলারের দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। তখন ট্রলারে থাকা মাঝিরা শুয়ে পড়েন। এ সময় ট্রলারটিকে লক্ষ্য করে ২০-৩০ রাউন্ড গুলিবর্ষণ করা হয়। পরে মাঝি মোহাম্মদ বেলাল ট্রলারটি ঘুরিয়ে নিয়ে শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে নোঙর করে।
মাঝি মোহাম্মদ বেলাল বলেন, সেন্টমার্টিন যাওয়ার সময় মিয়ানমারের উপকূল থেকে ট্রলারকে লক্ষ্য করে ২০-৩০ রাউন্ড গুলি করা হয়। পরে ট্রলারটিকে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে এনে নোঙর করা হয়েছে। গত বুধবার নির্বাচনীয় মালপত্র নিয়ে আসার সময়ও গুলি করেছিল।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর থেকে গুলি ছোড়া হয়েছে। মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) নাকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি গুলি চালিয়েছে তা বলা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে বিজিবির টেকনাফের-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গুলির বিষয়টি শুনেছি। সার্ভিস ট্রলারকে গুলিবর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির কাছে প্রতিবাদ লিপি পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
জেএন/এমআর