রাজধানীর গুলশান-বারিধারার কূটনীতিক এলাকায় ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কনস্টেবল মনিরুলকে হত্যা করে আরেক পুলিশ কনস্টেবল কাউসার। এসময় দুই পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
শনিবার (৮ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর অভিযুক্ত কাউসারকে আটক করা হয়।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, কাউসার নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের গুলিতে আরেক কনস্টেবল মনিরুল মারা যায় ও দুইজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়। নিহত মনিরুলকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এবং আহতরা ইউনাইটেড হসপিটালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আইজিপি বলেন, ঘটনার পর অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ২০ রাউন্ড চাইনিজ গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। অপরাধ যেই করুক- এ বিষয়ে ছাড় দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। আমরা অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। কেন, কী কারণে এমন ঘটনার সৃষ্টি হলো- বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, এখান থেকে আমরা আহতদের হাসপাতালে দেখতে যাবো। তাদের কাছ থেকেও জানার চেষ্টা করবো- তারা কী দেখেছে, কেন এমন ঘটনা ঘটলো। পুলিশ শৃঙ্খলাবাহিনী, তারা কীভাবে এ ধরণের ঘটনা ঘটলো- এমন প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে।
আগে এ ধরনের নিরাপত্তার জন্য নিয়োজিত পুলিশ সদস্যের ডিউটি সময় কম ছিল। এখন ৮ ঘণ্টা ডিউটি করার পর ৮ ঘণ্টা বিশ্রাম, তারপর আবার ডিউটি- এ কারণে হতাশা তৈরি হয়ে থাকতে পারে। হতাশা থেকে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে কিনা- প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আমরা সব বিষয় দেখার চেষ্টা করছি। কেন ও কী কারণে পুলিশ সদস্য এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এসব জানার চেষ্টা চলছে। প্রকৃত ঘটনা জানার পর বিস্তারিত জানানো হবে।
তার আগে রাত পৌনে ১২টার দিকে ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে দায়িত্ব থাকা পুলিশ কনস্টেবল কাউসার তার আরেক সহকর্মী কনস্টেবল মনিরুলকে গুলি করে হত্যা করে। এসময় পুলিশ সদস্য কাউসারের এলোপাথাড়ি ছোড়া গুলিতে জাপানি দূতাবাসের ড্রাইভার সাজ্জাদ হোসেনের শরীরে তিনটি গুলি লাগে। একই সময়ে সড়কে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় মনির নামে এক পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়। আহত দুইজন ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
পরে ঘটনাস্থলে পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াটসহ বিপুল পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল কাউসার বন্দুক তাক করে রাখায় প্রায় দুই ঘণ্টা তার সামনে যেতে পারেনি অন্য পুলিশ সদস্যরা।
বারিধারা কূটনীতিক এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার
পুলিশ সদস্যদের গুলিতে পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনার পর থেকে কূটনীতিক এলাকায় (ডিপ্লোম্যাটিক জোন) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুরো এলাকা নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ছেয়ে ফেলেছে পুলিশ। বারিধারা এলাকায় যে কেউ প্রবেশ করতে গেলে তাকে ব্যাপক তল্লাশি করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি দূতাবাসের সামনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ, সোয়াটসহ থানা পুলিশের একাধিক দল মোতায়েন রয়েছে।
জেএন/এমআর