দেশে নতুন করে উৎপাত শুরু করা মারাত্মক বিষধর সাপ রাসেলস ভাইপারের কামড় খেয়ে হাসাপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক কৃষক।
স্থানীয়রা সাপটিকে পিটিয়ে মেরে রোগীর সঙ্গে সাপও হাসপাতালে নিয়ে যায়। ডাক্তার সেটিকে বিষাক্ত রাসেলস ভাইপার বলে চিহ্নিত করে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায়। সাপের কামড়ে আহত কৃষক মধু বিশ্বাস হাবাসপুর ইউনিয়নের চরআফড়া গ্রামের মৃত আক্কেল বিশ্বাসের ছেলে।
মধু বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার সকাল ১০ টার দিকে চরআফড়া এলাকায় পদ্মা নদীর চরে ক্ষেত থেকে বাদাম তুলতে যান। হঠাৎ করেই তার ডান পায়ে কামড় বসায় একটি সাপ।
এ সময় চিৎকার করে উঠলে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়। এরপর রোগী ও সাপ নিয়ে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান মধুর স্বজন ও স্থানীয়রা।
সেখানকার চিকিৎসকরা সাপটিকে রাসেলস ভাইপার বলে শনাক্ত করেন। এরপর শুরু হয় মধু বিশ্বাসের চিকিৎসা।
পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মো. এনামুল হক বলেন, রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মধু বিশ্বাস আহত হয়েছেন। তিনি সুস্থ আছেন। তবে তাকে সার্বক্ষণিক পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশে রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপের উৎপাদ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। নদী অববাহিকা বিশেষ করে পদ্মা ও গড়াই নদীর দুই পাড়ে এই সাপের দেখা মিলছে বেশি।
চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া সাপ বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের পরিচিত। প্রাচীন বাংলার বরেন্দ্র জনপদে এদের দেখা বেশি পাওয়া যেত। এরপর বিভিন্ন জেলাতেও বিস্তৃতি ঘটেছিল এই জাতের সাপের। সেই চন্দ্রবোড়া বা উলুবোড়া সাপই স্কটিশ সরীসৃপ বিশেষজ্ঞ প্যাট্রিক রাসেলের নামানুসারে রাসেলস ভাইপার নামে পরিচিতি হয়।
কিন্তু পরিবেশ-প্রতিবেশের ভারসাম্যের অভাবে বাংলাদেশ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল রাসেলস ভাইপার। এক সময় এদের দেখা পাওয়াই যেত না, কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে দেশের দুএক জায়গায় এদের দেখা পাওয়া শুরু হয়। ২০২১ সালের পর বাড়তে থাকে, এ বছর এদের দেখা মিলছে বেশি।
সাপ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গঙ্গা/পদ্মা অববাহিকা এবং গড়াইয়ে দুই কুলের এলাকাগুলোতে এরা ছড়িয়ে থাকতে পারে। এছাড়া ঢাকার কাছেও এখন দেখা মিলছে এই রাসেলস ভাইপারের।
এরা সরাসরি বাচ্চা দেয় এবং একবারে গড়ে বাচ্চা জন্ম দেয় ২০ থেকে ৪০টি। ফলে রাসেলস ভাইপার দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে সারাদেশেই বিষধর এই সাপের ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।
জেএন/পিআর