রাত ১০টা-ভোর ৬টা পর্যন্ত মোবাইল টাওয়ার নিষ্ক্রিয় রাখার প্রস্তাব

অনলাইন ডেস্ক

ফ্রিল্যান্সিং বা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ যেন ব্যাহত না হয় তেমন ব্যবস্থা করে গ্রামীণ অঞ্চলে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত মোবাইল টাওয়ার নিষ্ক্রিয় রাখার প্রস্তাব করেছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত।

- Advertisement -

শনিবার (২২ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ প্রস্তাব করেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

- Advertisement -google news follower

প্রাণ গোপাল বলেন, একজন চিকিৎসক হিসেবে আমি সবসময় প্রযুক্তির পক্ষে। আমি ডিজিটাল বাংলাদেশের পক্ষে, স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে। কিন্তু আমাদের ডিজিটাল পদ্ধতি অর্থাৎ যেভাবে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার হচ্ছে, আমার মনে হয় না আর বেশি দিন আমাদের এই প্রজন্ম প্রতিবন্ধী না হয়ে থাকতে পারবে। বিল গেটস নিজে বলেছেন উনি ওনার সন্তানকে ১৬ বছরের আগে মোবাইল ফোন স্পর্শ করতে দেননি। মার্টিন কুপার এক বছর আগে বলেন, আমি যদি জানতাম যে একজন ব্যক্তি, এই প্রজন্ম মোবাইল ফোনের সঙ্গে ৫-৬ ঘণ্টা আঠার মতো লেগে থাকবে, তাহলে এটা আবিষ্কার করা আমার জন্য একটা নির্মম ভুল হয়েছে বলে আমি মনে করি।

‘একই সঙ্গে বুকার প্রাইজ উইনার হাওয়ার্ড জ্যাকবসন বলেন, আগামী ২০ বছর পরে বিশ্বের জনসংখ্যা লেখাপড়ায় প্রতিবন্ধী হয়ে যাবে, তারা প্রযুক্তি চালাতে পারবে কিন্তু কম্পোজিশন করতে পারবে না, কোনো কিছু শিখতে পারবে না। সুতরাং কোনোভাবে মোবাইলের কোনো একটা অ্যাপ তৈরি করে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে মোবাইল টাওয়ারগুলো নিষ্ক্রিয় করা যায় কি না অথবা সেই মোবাইল টাওয়ার যাতে ব্যবহৃত না হয় মানে ফ্রিল্যান্সিং বা অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বিকল্প পথ ছাড়া অন্য কোথাও যেন ব্যবহৃত না হয় সেই ক্ষেত্রে আমাদের নজর দেওয়া উচিত।’ বলেন কুমিল্লা-৭ আসনের এই এমপি।

- Advertisement -islamibank

প্রাণ গোপাল বলেন, আমার রোগীর সংখ্যা যেভাবে হু হু করে বেড়ে যাচ্ছে, ১০ বছর থেকে শুরু করে সবারই একটা কথা কানে শো শো করে, ভু ভু করে, কানে শুনি না, লেখাপড়ায় মন দিতে পারি না। তাহলে আমরা কোথায় চলে যাচ্ছি। এই জায়গা থেকে কোনো কিছু একটা আবিষ্কার করা উচিত যেন রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত এই প্রযুক্তি থেকে আমাদের তরুণ সমাজ একটু দূরে থাকে।

তিনি বলেন, শিক্ষার বিষয়ে ১০০ বছরের কথা চিন্তার কোনো বিকল্প নেই। এই শিক্ষা পেতে হলে দরকার একটা সুস্থ জাতি। সেই জাতির জন্য প্রয়োজন মেডিকেশন। আমাদের এই স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে অনেকেই অনেক সমালোচনা করেন। তারপরও কিন্তু বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা যে খুব কম উন্নতি লাভ করেছে তা আমি স্বীকার করবো না। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা এখন অনেকটাই উন্নতির পর্যায়ে।

‘কোনো কোনো ক্ষেত্রে কিছুটা বিচ্যুতি লক্ষ্য করা যায়। ডাক্তার ও ডাক্তারদের আবাসিক সমস্যা সমাধান না হলে কখনই সেটা দেওয়া সম্ভব হবে না। বিদেশে ডাক্তাররা সার্বক্ষণিক হাসপাতালে থাকেন, বাংলাদেশে আমরা সে ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে পারছি না, কারণ আমরা অফিস মেইনটেইন করি। ডাক্তারি পেশা এমন একটা পেশা যেখানে অফিস মেইনটেইন করা সম্ভব নয়। ডাক্তারদের আবাসিক সুবিধা দেওয়াটা সবচেয়ে অপরিহার্য।’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, অমর্ত্য সেনের ভাষায় যদি আমরা বলি, শিক্ষা এবং চিকিৎসা- সেটা থাকা উচিত সরকারি খাতে। এটাকে যদি বেসরকারি করা হয় তাহলে শিক্ষা এবং চিকিৎসার কোনো গুণগত মান থাকে না, তখন সেটা হয়ে যায় একটা পণ্য। দুর্ভাগ্যবশত পৃথিবীর সব দেশেই শিক্ষা এবং চিকিৎসা পণ্য হয়ে গেছে। আপনার টাকা আছে আপনি চিকিৎসা পাবেন, আপনার টাকা নেই তো আপনি চিকিৎসা পাবেন না। সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অধিকাংশ লোক যারা মধ্যম শ্রেণির নিচে আছেন তাদের বেলায় কিন্তু দেখার মতো কেউ নেই।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই বাজেটে কালো টাকা এবং সাদা টাকা নিয়ে কথা তুলেছি। অর্থাৎ অপ্রদর্শিত আয়, প্রদর্শিত আয় যেটা আমরা ট্যাক্স দিয়েছি। একজন করদাতা হিসেবে যখন ৩০ লাখ টাকার ওপরে আমার আয় থাকে, আমাকে ৩০ শতাংশ কর দিতে হচ্ছে। কিন্তু যিনি টাকা দেখাননি গত বছর তিনি কিন্তু ১৫ শতাংশ দিয়ে সেই টাকা বৈধ করে অপ্রদর্শিত আয়কে প্রদর্শিত আয় বা বৈধ ট্যাক্স করে নিচ্ছেন। এতে সঠিক করদাতা যারা তারা কিন্তু কর দিতে অনিচ্ছা পোষণ করবেন।

প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, আমরা সবসময় কালো ও সাদা টাকা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু ইনফরমাল গ্রে-মানি (কর ফাঁকি সম্পর্কিত) অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি, যার ট্যাক্স দেওয়া হয় না। যাকে কোনো অবস্থানে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, সেটা নিয়ে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় কিছু বলেননি। গ্রে-মানি অপ্রদর্শিত আয়ের চেয়েও অনেক খারাপ। এটাকে সংকুচিত না করা হলে অর্থপাচার বন্ধ করা যাবে না।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM