চাঁদপুরের কৃর্তী সন্তান, পুরান ঢাকার হাকিমপুরী জর্দার ব্যবসায়ী মো. কাউছ মিয়া (৯৪) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সোমবার (২৪ জুন) দিনগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে স্ত্রী, ৮ ছেলে ও ৮ মেয়ে রেখে গেছেন কাউছ মিয়া। তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে তার মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুর সদর উপজেলা রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী।
কাউছ মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, মঙ্গলবার বাদ যোহর আরমানী টোলা মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আব্বা বার্ধক্যের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসার পর দেশে আনা হয়। পুরান ঢাকার বাসভবনে শয্যাশায়ী ছিলেন। শনিবার বিকেলে আব্বার (হাজি মো. কাউছ মিয়ার) শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আজগর আলী হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে দুনিয়া থেকে চির বিদায় নেন। আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি, আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন, আমিন।
জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তিতে মুজিববর্ষে জাতীয় পর্যায়ে সেরা করদাতাকে সম্মাননা প্রদান কার্যক্রমটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে সর্বাধিকবার সর্বোচ্চ করদাতার সম্মান অর্জন করায় এবং রাজস্ব খাতের অন্যান্য সব পুরস্কারে ভূষিত হওয়ায় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হাজী মো. কাউছ মিয়াকে মুজিবর্ষের সেরা করদাতা নির্বাচন করা হয়।
২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে কাউছ মিয়ার নাম ঘোষণা করে এনবিআর। ২০০৮ সাল থেকে কাউছ মিয়া দেশে ব্যবসায়ী শ্রেণিতে সর্বোচ্চ করদাতার একজন। কাউছ মিয়া ৬১ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। ১৯৫৮ সালে প্রথম কর দেন তিনি। সর্বোচ্চ আয়করদাতা হিসেবে টানা ১৪ বার রাষ্ট্রীয় পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন তিনি।
হাজি মো. কাউছ মিয়া ১৯৩১ সালের ২৬ আগস্ট চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আব্বাস আলী মিয়া ও মা ফাতেমা খাতুন। কিশোর বয়সেই তিনি চাঁদপুর শহরের ব্যবসায়ী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেন। এ সময় তিনি ১৮টি ব্র্যান্ডের বিস্কুট, সাবান ও সিগারেটের এজেন্ট হন। ২০ বছর চাঁদপুরে ব্যবসা করার পর তিনি ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জে ব্যবসা শুরু করেন। তিনি ৪০টির বেশি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।
তিনি আগা নবাব দেউড়ীতে বসবাস করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। কর প্রদানে সততা, আন্তরিকতা ও প্রণােদনার স্বীকৃতিস্বরূপ হাজি মো. কাউছ মিয়াকে সিআইপি মর্যাদায় ভূষিত করা হয়েছে। পরে যতবার এনবিআর করদাতার সম্মাননা দিয়েছে ব্যক্তি পর্যায় সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে প্রতিবারই অর্থাৎ টানা ২০বার তিনি শীর্ষ করদাতার সম্মাননা পেয়ে পেয়েছেন।
জেএন/এমআর