জাতীয় পর্যায়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থী-এই তিন ক্ষেত্রে মোট ১৮ ক্যাটাগরিতে ১২৬ জনকে দেওয়া হচ্ছে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণপদক এবং সনদপত্র দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ-২০২৪’ উপলক্ষ্যে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সচিব ফরিদ আহম্মদ। এবারের দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শিশুবান্ধব প্রাথমিক শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশের দীক্ষা’।
সচিব বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকাল ১০টায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৩ প্রদান এবং জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ ২০২৪ এর উদ্বোধন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে সম্মতি জানিয়েছেন।
সচিব আরও বলেন, জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ পালনের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো বিদ্যালয়, ক্লাস্টার ও উপজেলা/থানা পর্যায় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী, শিক্ষক, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, কর্মচারী এবং কর্মকর্তাকে পদক ও সনদ প্রদানের মাধ্যমে তাদের কাজের স্বীকৃতি প্রদান করা। ১৯৮৩ সালে বোর্ড অব গভর্নরস কর্তৃক সর্বাধিক পদ্ধতি প্রয়োগে শিক্ষার মানোন্নয়নে অবদানের জন্য দক্ষ শিক্ষকদের পুরস্কার প্রথা অনুমোদন পরবর্তী প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদযাপন কার্যক্রম শুরু হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পদক দেওয়ার মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে নিজ সংস্কৃতির উন্নয়ন, আত্ম উন্নয়ন, আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন এবং দেশ ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজ দেশের সংস্কৃতি উন্মোচন করা। তাছাড়া জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২১ এর নির্দেশনা অনুযায়ী শিশুর যোগ্যতা বিকাশে শিশুর মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক সহায়তা করা। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহে স্ব-স্ব ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকেও পুরস্কৃত করা হয়। সেই সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক নৈপুণ্যে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য পদক ও সনদ প্রদানের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হয়। এবার ৩ ক্ষেত্রে ১৮ ক্যাটাগরিতে ১২৬ জন পদক পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে ৫৪ জন পদক গ্রহণ করবেন। বাকিদের পদক পৌঁছে দেওয়া হবে।
সচিব ফরিদ আহম্মদ বলেন, সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের ভর্তির হার বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার হ্রাস, বিদ্যালয়ের উপস্থিতি হার বৃদ্ধি এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২৬ হাজারেরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে এবং শিক্ষকের সংখ্যাও বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ ও শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশে পাঠদান একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন চৌকস প্রজন্ম গঠনে নিয়ামক ভূমিকা পালন করতে পারে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে শিশুরা স্কুলে যেতে উৎসাহী হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর পাশাপাশি অভিভাবক ও স্কুল পরিচালনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কাজ করছি।
সচিব বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার এমন এক নতুন শিক্ষার বীজ বপনের কাজে হাত দিয়েছে, যা শিক্ষার্থীর মস্তিষ্ক ও পিঠ থেকে মুখস্থবিদ্যার বোঝা ঝেড়ে ফলে তাদের কৌতূহল, জিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান, গবেষণা ও ভাবনার শক্তিকে জাগাবে ও নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরিতে উপযোগী করে তুলবে। শিশু তার জানার পরিধি বাড়াবে, আপন ভুবন সাজাবে, অভীষ্ট গন্তব্য পৌঁছাবে।
জেএন/এমআর