সেই কর কর্মকর্তা ফয়সালকে এনবিআর থেকে সরানো হলো

অনলাইন ডেস্ক

আয়কর বিভাগের (ট্যাক্স লিগ্যাল ও এনফোর্সমেন্ট) প্রথম সচিব ও অতিরিক্ত কর কমিশনার কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালকে বদলি করে বগুড়ায় পাঠানো হয়েছে।

- Advertisement -

রোববার (৩০ জুন) এনবিআরের কর প্রশাসন বিভাগের প্রথম সচিব মো. শাহিদুজ্জামান সই করা চিঠির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

- Advertisement -google news follower

চিঠিতে তাকে বগুড়া কর অঞ্চলের পরিদর্শী রেঞ্জ-১ এ বদলি করা হয়েছে। তার স্থলে অতিরিক্ত কর কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

গত ২৭ জুন দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত থেকে তার নামে-বেনামে থাকা সব স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (অবরুদ্ধ) আদেশ দেওয়া হয়।

- Advertisement -islamibank

এনবিআরের কর্মকর্তা কাজী আবু মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ লেনদেনের মাধ্যমে বিপুল সম্পদ অর্জনের অভিযোগের ভিত্তিতে গত বছর দুদক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। সংস্থাটি প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে গতকাল ফয়সাল ও তার আত্মীয়স্বজনের নামে সম্পদের বিবরণী আদালতের কাছে তুলে ধরে।

দুদক আদালতকে বলেছে, ২০০৫ সালে কাজী আবু মাহমুদ ফয়সাল বিসিএস (কর) ক্যাডারে সহকারী কর কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। তিনি থাকেন রাজধানীর বেইলি রোডের একটি ফ্ল্যাটে। তার স্থায়ী ঠিকানা খুলনার খান এ সবুর রোডের মুজগলি এলাকায়।

ফয়সালের শ্বশুর আহম্মেদ আলী একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা। তার শাশুড়ি মমতাজ বেগম পেশায় গৃহিণী। ফয়সাল ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ নিজের ও স্ত্রীর নামে রাখার পাশাপাশি স্বজনদের নামেও রেখেছেন। শ্বশুর ও শাশুড়ির নামের ব্যাংক হিসাবে যে অর্থ লেনদেন হয়েছে, তা ফয়সালেরই অপরাধলব্ধ আয়। আদালতে জমা দেওয়া দুদকের নথি বলছে, ফয়সাল ও তার ১১ স্বজনের নামে ১৯টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৮৭টি হিসাবে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে তার শ্বশুর-শাশুড়ির ব্যাংক হিসাবে। দুদক আদালতে জানিয়েছে, ফয়সাল তার অপরাধলব্ধ আয় লুকানোর জন্য স্বজনদের নামে ৭০০টির মতো ব্যাংক হিসাব খুলেছিলেন। এর মধ্যে দুদক ৮৭টি ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছে।

আদালতে জমা দেওয়া দুদকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের জুনে রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ফয়সালের নামে পাঁচ কাঠার একটি প্লট কেনা হয়। এ ছাড়া, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে তার নামে আলাদা চারটি দলিলে জমি কেনা হয়। এসব সম্পদের দলিল মূল্য দেখানো হয় ৪০ লাখ টাকার বেশি।

গত বছর রাজধানীর ভাটারা এলাকায় ফয়সালের স্ত্রী আফসানা জেসমিনের নামে কেনা হয় পাঁচ কাঠার প্লট। প্লট কেনার অর্থ (৭৫ লাখ টাকা) পরিশোধ করা হয়েছে মাহমুদা হাসানের নামে থাকা একটি ব্যাংক হিসাব থেকে। এর চার বছর আগে স্ত্রীর নামে একই এলাকায় আরও পাঁচ কাঠার একটি প্লট কেনা হয়। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জেও স্ত্রীর নামে জমি রয়েছে। এসব সম্পদের দলিল মূল্য দেখানো হয়েছে ৪২ লাখ টাকা।

ফয়সালের শ্বশুর আহমেদ আলীর নামে রাজধানীর রমনা এলাকায় গত বছরের অক্টোবরে একটি ফ্ল্যাট কেনা হয়, যার মূল্য দেখানো হয় ৯৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া, শাশুড়ি মমতাজ বেগমের নামে ২০২২ সালে খিলগাঁওয়ে ১০ কাঠার একটি প্লট কেনা হয়। দলিল মূল্য ৫২ লাখ টাকা।

ফয়সাল ও তার পরিবারের সদস্যের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব ও সঞ্চয়পত্রের বিবরণও আদালতে জমা দিয়েছে দুদক। এতে দেখা যায়, ফয়সাল, তার স্ত্রী ও শ্বশুরের নামে ৫০ লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এর বাইরে তার স্বজনদের নামেও সঞ্চয়পত্র রয়েছে। দুদক বলেছে, তাদের নামে থাকা সঞ্চয়পত্রের মোট অর্থের পরিমাণ দুই কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

ফয়সাল, তার স্ত্রী, শ্বশুর ও তার স্বজনদের ১৯টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ ৬ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০৮ টাকা।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM