ভারতের আসামে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত ৩৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর মধ্যে অন্তত আটটির পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন আসামের ২৮টি জেলার পায় সাড়ে ১১ লাখ মানুষ। আসামের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য স্টেটসম্যান এ বিষয়টি জানিয়েছে।
আসামের আসাম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথোরিটির (এএসডিএমএ) গতকাল মঙ্গলবার বন্যা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় বন্যায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ৩ জনসহ রাজ্যটিতে বন্যায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৮ জনে।
এএসডিএমএ জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। কারণ রাজ্যের ২৮টি জেলার ১১ লাখ ৩৪ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে অথবা বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত উল্লেখযোগ্য জেলাগুলো হলো—কামরূপ, তামুলপুর, চিরাং, মরিগাঁও, লখিমপুর, বিশ্বনাথ, ডিব্রুগড়, করিমগঞ্জ, উদালগুড়ি, নগাঁও, বনগাইগাঁও, সোনিতপুর, গোলাঘাট, হোজাই, দাররাং, চরাইদেও, নলবাড়ি, জোড়হাট, শিবসাগর, কার্বি আংলজিপাড়া, মাজুলগঞ্জ, গোলাঘাট, তিনসুকিয়া, কোকরাঝাঁড়, বারপেতা, কাছাড়, কামরূপ (এম)।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রাজ্যের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর মধ্যে অন্তত আটটির পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এগুলো হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, সুবানসিরি, দিখৌ, দিসাং, বুড়িদিহিং, জিয়া-ভারালি, বেকি ও কুশিয়ারা। সামগ্রিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, আসামে চলতি বছর দুই দফা বন্যায় ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর মধ্যে শুধু গত মে থেকেই ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত লখিমপুরে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার মানুষ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ধেমাজি ও কাছাড়। এ দুই জেলায় পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন যথাক্রমে ১ লাখ ১ হাজার ৩৩৩ এবং ৬৬ হাজার ১৯৫ জন।
রাজ্য সরকারের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের তত্ত্বাবধানে বন্যাকবলিত জেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ৭২টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। শিগগিরই আরও ৬৪টি শিবির খোলার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
পাশের অরুণাচল প্রদেশে ব্যাপক বর্ষণের ফলে সৃষ্টি পাহাড়ি ঢলকে এই বন্যার জন্য দায়ী করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা।
সামগ্রিক বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার বিষয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
জেএন/পিআর