শত কোটি টাকার মালিক প্রধানমন্ত্রীর আরেক চাকর মান্নান

অনলাইন ডেস্ক

তার নাম মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাকর ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। প্রধানমন্ত্রীর ফাই-ফরমাস করছেন। বাজার হাট করে দিতেন এবং জাহাঙ্গীরের (প্রধানমন্ত্রীর আরেক চাকর) চেয়ে এক ধাপ নিচের হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হতো। সেই মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানও এখন ১০০ কোটি টাকার মালিক। আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধান করছে। তবে কুমিল্লা নিবাসী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এখন দেশে নেই। তিনি বিদেশে আছেন।

- Advertisement -

জানা গেছে, কানাডায় তার বিপুল সম্পত্তি আছে। সেখানে তিনি বাড়ি করেছেন। তার মেয়েকে কানাডায় পড়িয়েছেন। মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত কর্মচারী ছিলেন। তাকে কাজের লোক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু কাজের লোক হয়ে আস্তে আস্তে আওয়ামী লীগের নেতা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতির অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপন ফাইল দেখতেন। আগাম সেই ফাইলের খবর বিভিন্ন জনকে জানিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। পরবর্তীতে তিনি কুমিল্লা অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ সম্পদ গড়েছেন। ঢাকায় তার একাধিক বাড়ি রয়েছে। তবে একটা সময় যখন প্রধানমন্ত্রী জানতে পারেন তার (আব্দুল মান্নান) বিপুল বিত্তের কাহিনি, তখন তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে দেশ থেকে পালিয়ে যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের মেয়ে কানাডার দামী ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছে। বিপুল পরিমাণ সম্পদ সেখানে পাচার করা হয়েছে। কানাডা ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশে মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সম্পত্তি আছে বলে জানা গেছে।

- Advertisement -google news follower

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, জাহাঙ্গীরের মতো মোহাম্মদ আব্দুল মান্নানের যখন অবৈধ কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তথ্য পায় তখনই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ব্যক্তিগত কর্মচারী থেকে বাদ দেন। তাকে গণভবনে ও অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে তদন্তগুলো হয়েছিল সেই তদন্তগুলো তিনি প্রধানমন্ত্রীর একদা ঘনিষ্ঠ এরকম একটা ধারণা দিয়ে বাধাপ্রাপ্ত করেছিলেন। এরপর তিনি দেশ থেকে পালিয়ে যান।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান এবং তার স্ত্রীর নামে ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে। তার বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১০০ কোটি টাকা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই টাকা সবই বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

- Advertisement -islamibank

উল্লেখ্য যে, আব্দুল মান্নান প্রধানমন্ত্রীর চা সরবরাহকারী, বাজার করার সূত্রে প্রধানমন্ত্রীর কক্ষে যেতে পারতেন এবং সেখানে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ফাইলগুলো দেখতেন। বিশেষ করে বিভিন্ন পদোন্নতি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইলগুলো দেখে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে তাদের বিভিন্ন ব্যক্তিকে অবহিত করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়ীকে ব্লাকমেইল করা, ব্যবসায়ীদের গোপন তথ্য দেয়ার মাধ্যমেও বিত্তবান হয়েছিলেন আব্দুল মান্নান। অবশ্য এই সমস্ত ঘটনা নিয়ে এর আগেও তদন্ত হয়েছে এবং এ সমস্ত তদন্তের পর তাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বিচ্যুতি করা হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আব্দুল মান্নান প্রধানমন্ত্রীর চাকর হিসেবে বহিষ্কৃত হবার পরও বেশ কিছু ধরে অনিয়ম করেছিলেন। তারপর যখন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয় তখন তা টের পেয়ে তিনি দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। বর্তমানে তিনি কানাডায় অবস্থান করছেন বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM