প্রশ্নপত্র ফাঁস

পিএসসিতে সিআইডি টিম/তালিকা ধরেই হচ্ছে তদন্ত

ফেঁসে যাওয়ার আতঙ্কে অনেক কর্মকর্তা

অপরাধ ডেস্ক :

প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ও সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনে (পিএসসি)তে হানা দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

- Advertisement -

সিআইডি সূত্র বলছে, প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য কয়েকটি তালিকা করে তদন্ত শুরু করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া ছয়জনের তথ্যের ভিত্তিতে এই তালিকা করা হয়।

- Advertisement -google news follower

সোমবার সিআইডির একটি প্রতিনিধিদল পিএসসিতে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট, পায়ের ছাপসহ বিভিন্ন ধরনের নমুনা সংগ্রহ করেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষায় মিরপুর এলাকায় সাজেদুলের বুথে ১০০ জন পরীক্ষার্থীকে রেখে প্রশ্নপত্র সমাধান করা হয়।

- Advertisement -islamibank

মোহাম্মদপুরের বুথে যাঁরা ছিলেন তাঁদের বিষয়েও তাঁরা কাজ করছেন। এর বাইরেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাঁরা পেয়েছেন। এগুলোর যাচাই-বাছাই চলছে।

জানা গেছে, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার ১৭ জনের সবাই তাদের দায় স্বীকার। এর মধ্যে পিএসসির ছয় জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। এছাড়া মামলায় এজাহারভুক্ত ১৪ জনসহ সন্দেহভাজন অন্তত ৭৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করতে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অভিযান চলছে।

সিআইডির ভাষ্য, তালিকাভুক্তদের মধ্যে একটি গ্রুপ সরাসরি প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। অপর গ্রুপ ফাঁস হওয়া প্রশ্নের ক্রেতা। এর বাইরে থাকা গ্রুপ আড়ালে থেকে এই দুই গ্রুপের সদস্যদের সহযোগী।

এ ছাড়া প্রশ্ন ফাঁসকারীদের মোবাইল ব্যাংকিং ও ট্র্যাডিশনাল ব্যাংকিং চ্যানেলে যে লেনদেন হয়েছে, তাঁদের শনাক্ত করা হয়েছে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুবিধা নিয়ে পাশ করা এবং চাকরি পাওয়া ক্যাডারদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের পর সুবিধাভোগী অনেক কর্মকর্তা আতঙ্কে রয়েছেন।

প্রশ্নপত্র ফাঁস আগে থেকেই হয়ে আসছে। তবে ২০০২ সালে ২৪তম ব্যাচ থেকে ব্যাপক হারে শুরু হয় প্রশ্ন ফাঁস। সে সময় একটা বিশেষ জায়গা থেকে তালিকা আসত। তালিকায় থাকা সবাই পাশ করত।

এছাড়া আবেদ আলী চক্র, পিএসসির সাবেক মেম্বার মাহফুজুর রহমানের চক্র ব্যাপক হারে প্রশ্ন ফাঁস করে দেশব্যাপী অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করত।

ফাঁস হওয়া প্রশ্নে বিসিএস কর্মকর্তা হয়ে অনেকে সরকারের সব জায়গায় পদায়ন রয়েছে তাদের। একাধিক সংস্থা পর্যালোচনা করে দেখেছেন যে, ২০ ভাগের বেশি প্রশ্ন ফাঁসের সুবিধাভোগী ঢুকে পড়েছে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা এ কর্মকর্তারাই বেশি জড়িত। তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। দুর্নীতি ছাড়া অন্যকিছু তারা বোঝেন না।

সিআইডির পাশাপাশি একাধিক সংস্থা অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। অনুসন্ধানে এ ধরনের তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফাঁস হওয়া প্রশ্নে যারা বিসিএস ক্যাডারসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে এসব দুর্নীতিবাজকে সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা উচিত।

সিআইডি সূত্র বলেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীচক্রের অন্যতম হোতা পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী। তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন এই চক্রে শতাধিক সদস্য রয়েছেন।

এর মধ্যে তাঁর অন্যতম সহযোগী পিএসসি কর্মচারী সাজেদুল ইসলাম, পানি ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন ও তাঁর ছোট ভাই সাইম হোসেন এবং ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী লিটন সরকার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে অনেককেই দিয়েছেন প্রশ্ন ও সমাধান।

পিএসসির ডেসপাস রাইডার সাজেদুল তাঁর জবানবন্দিতে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে বলেছেন, পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফরের মাধ্যমে তিনি রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন পেয়েছেন। এরপর তিনি সেই প্রশ্ন অর্থের বিনিময়ে অন্তত চারজনের কাছে দেন।

সিআইডির প্রধান মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, প্রশ্ন ফাঁসে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন সিআইডির প্রধান।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM