কারফিউ শিথিল হওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগরে বেড়েছে সবজি সরবরাহ। স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে ক্রেতাদের আনাগোনা। যার প্রভাবে বিভিন্ন কাঁচাবাজারে কমতে শুরু করেছে দামও।
আজ শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বেশ কয়েকটি বাজার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
মাছের দাম বেশ চড়া। পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচের দামে রীতিমতো আগুন। আগের মতই রয়েছে রয়েছে চাল ও ডালের দাম।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রাম শহরের রেয়াজউদ্দিন বাজার, কর্ণফুলী মার্কেট, চাক্তাই বাজার ও কাজির দেউরি বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের অন্য দিনের মতো সকাল সকাল কেনাবেচাও শুরু হয়েছে মাছ ও কাঁচাবাজারে। সংকট কেটে যাওয়ায় বেড়েছে সবজির সরবরাহ।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের বলছেন, সংকটের কয়েক দিন পার করার পর স্বস্তির কথা। তারা জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করায় বেড়ে গেছে সবজির সরবরাহ, তাই কমেছে দামও।
কয়েকদিন পর আবারও ভরপুর আলু-পেঁয়াজের দোকানগুলো। আলুর দাম ঠিক থাকলেও বাড়তির দিকে-পেঁয়াজের দাম।
আসকার দিঘীর পারের বাসিন্দা রুপনা চাকমার সাথে কথা হয় কাজির দেউরী বাজারে। তিনি জানান, আগে ৭০-৮০ টাকার নিচে কোনো সবজির দাম ছিল না। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে সবজির দাম অনেকটা কম। তবে মাছ, মুরগির দাম মোটামুটি বাড়তি রয়েছে।
সবজিতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তি বলে জানান অন্যান্য ক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চট্টগ্রাম নগরীর বাজারগুলোয় কাঁচা পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। এতে আগামী কয়েকদিনে আরও কমবে দর। তবে, বিভিন্ন জেলা থেকে আসা সবজিবাহী ট্রাক বেশ সময় আটকে থাকায় পচে গেছে বেশিরভাগ শাক-সবজি।
অবিক্রীত থাকা এসব সবজিতে পানসে হয়েছে আড়তদারদের জীবন। কেননা, বেশি ভাগই পচে গেছে, তারপরও খুঁজছেন চালান তোলার শেষ অবলম্বন। তারা বলছেন, গত দুই দিনে বিকিকিনি করতে না পারায় অধিকাংশ সবজি পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
রেয়াজউদ্দিন বাজারের আলু-পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জাহেদুল বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে হওয়ায় পণ্যবাহী গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। এতে আলু-পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়েছে। শীঘ্রই দামও কমবে।
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, গত ২-৩ দিনের তুলনায় সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা কমেছে। গত দুইদিন আগে ১ কেজি মাল ৭০ থেকে ৮০ টাকা ছিল এখন সেই সবজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। পর্যাপ্ত পরিমাণ মাল আমদানি তবে দাম অনেক কম।
চাক্তাই বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী মহিম জানান, পাইকারিতে একদিনে কাঁচামরিচের দাম কেজিতে ৪০ টাকা কমে নেমেছে ১৬০ টাকায়। দাম কমেছে বেগুনেরও। বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।
একইভাবে কমেছে, চিচিঙ্গা, পটল, পেঁপে, ঢ্যাঁড়স, করলা, ধুন্দলও বরবটি। কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি করলার দাম ওঠে ১৫০ টাকা পর্যন্ত, আজ কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়।
দাম কমে প্রতি কেজি পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, চিচিঙ্গা ও ঢেঁড়স কেজি ৬০ টাকায়, পেঁপে কেজি ৫০ টাকায়, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, মিষ্টিকুমড়া কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, শসা কেজি ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, কচুমুখি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, টমেটো কেজি ১৬০ থেকে ১৮০ টাকায়, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরবরাহ আরও বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়, আর সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩১০ টাকায়। কমতির দিকে ডিমের বাজারও।
এদিকে, প্রত্যাশা মতো ক্রেতা নেই মুদি দোকানগুলোতে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে বলে জানালেন দোকানিরা।
যদিও সংকট বাড়ায় ডাল, তেল ও চিনির দাম এখনও চড়া। এদিকে, চালের বাজার পরিবহন সংকটে পড়লেও বিক্রেতারা জানান, তেমন চাহিদা না থাকায় নতুন করে বাড়েনি দাম।
জেএন/পিআর