ভাইরাল আইনজীবী কে এই মানজুর মতিন?

অনলাইন ডেস্ক

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে রাজপথে সোচ্চার থেকে ও উচ্চ আদালতে আইনি লড়াই করে ভাইরাল হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মানজুর আল মতিন পীতম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। শতশত ফেসবুক ব্যবহারকারী তার ছবি শেয়ার তাকে ‘রিয়েল হিরো’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

- Advertisement -

তানিয়া তানু নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিনের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, অনেক বাংলা সিনেমা দেখেছি, যেখানে সাবানা হুট করে আইনজীবী হয়ে যায় সন্তান বা স্বামীর প্রয়োজনে। মানজুর আল মাতিনকে মূলত সবাই চেনে নিউজ প্রেজেন্টার বা উপস্থাপক হিসেবে। অথচ যখন দেশের প্রয়োজন হলো, নিজের আইনি পোশাকটা লাগিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন স্টুডেন্টদের পক্ষে, দেশের পক্ষে!

- Advertisement -google news follower

তিনি লিখেছেন, যারা তাকে নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে দেখে অভ্যস্ত, সবার কাছে ব্যাপারটা বাংলা সিনেমার মতই মনে হওয়ার কথা! জীবনের গল্প মাঝেমধ্যে সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। মানজুর আমাদের সেটিই দেখিয়ে দিলেন।

সুজন চৌধুরী নামের একজন ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, হিন্দি সিরিয়ালের ভার্চুয়াল আদালতের উকিল সাহেবের কাজ দেখে যারা ইমপ্রেসড, তারা দেখে নিতে পারেন বাস্তব দুনিয়ার এই আইনজীবীকে। যিনি বিবেকের তাড়নায় চুপ থাকতে পারেননি। কালো গাউন গায়ে দিয়ে এজলাস কক্ষের পাশাপাশি আজ রাস্তায় দাঁড়িয়েছেন ছাত্রদের ভাই বন্ধু ও একজন ত্রাণকর্তা হিসেবে। অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে দোয়া আপনার জন্য ভাই।

- Advertisement -islamibank

ফেসবুক ওয়ালে অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিনকে এ রকম শত শত প্রশংসাসূচক পোস্ট ভেসে বেড়াচ্ছে।

কে এই মানজুর আল মতিন

অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন পীতম সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের তালিকাভুক্ত আইনজীবী। তার বাবা বিচারপতি আব্দুল মতিন আপিল বিভাগের বিচারপতি ছিলেন। বর্তমানে অবসর জীবনযাপন করছেন। পীতম ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসএসি ও এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন।

শিক্ষাজীবন শেষে তিনির আইনপেশায় মনোনিবেশ করেন। প্রখ্যাত সংবিধান বিশেষজ্ঞ প্রয়াত মাহমুদুল ইসলামের সাহচার্যে তার আইনপেশায় হাতেখড়ি। বর্তমানে প্রখ্যাত দেওয়ানি আইন ও রিট বিশেষজ্ঞ জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগীর জুনিয়র হিসেবে কাজ করছেন। আইনপেশা পরিচালনার পাশাপাশি পীতম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরে সংবাদ পাঠ করেন ও টকশো উপস্থাপনা করেন। তার স্ত্রী পেশায় চিকিৎসক। তিনি ১২ বছর বয়সী এক সন্তানের জনক।

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো প্রসঙ্গে অ্যাডভোকেট মানজুর আল মতিন পীতম বলেন, আমি আমার সিনিয়র প্রয়াত মাহমুদুল ইসলামের কাছ থেকে শিখেছি যে, আইনজীবী হিসেবে সমাজের, মানুষের ও আইনের প্রতি দায়বদ্ধতা কাকে বলে। ১৭ জুলাই রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ফারহান আমার চোখের সামনে গুলিতে মারা গেল। ওইদিন আমি আমার স্ত্রী ও আমার বন্ধ রিন্টু আমরা যখন দেখলাম বাচ্চাদের ওপর গুলি হচ্ছে, বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নিরস্ত্র আবু সাঈদকে এভাবে মেরে ফেলা হলো। তারপর আমার কাছে মনে হয়েছে, কোনো মানুষ সে হোক আওয়ামী লীগের, হোক সে বিএনপির, হোক সে যেকোনো দলের, কোন মানুষ নিরাপদ নয়।

তিনি বলেন, সে কারণে আমার মনে হয়েছে পরের গুলিটা তো আমার বুকে লাগতে পারে। কারণ ফারহান কি আমার সন্তান নয়? আবু সাঈদ কি আমার সন্তান নয়? তারপর থেকে রাস্তায় থাকছি। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমাদের ভাইয়েরা রাস্তায় নেমেছেন। তারা জানেন রাস্তায় নামলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। এই মানুষগুলো কত কষ্ট করে, সর্বোচ্চ বিক্রি করে বিদেশে যান আমরা জানি। সেই মানুষগুলো যখন রাস্তায় নেমেছেন, তাদের জীবন শেষ হয়ে যাবে, তারপরও তারা প্রতিবাদ করেছেন। আর আমরা যারা আরাম-আয়েশে এতগুলো বছর কাটিয়েছি, তাদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM