জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) সরকারি অফিস বানালে হবে না। এনবিআরকে রাষ্ট্রীয় অফিস বানাতে হবে। এনবিআরের চেয়ারম্যান বা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকার প্রধানের ইচ্ছামতো চলবে—এমন নিয়মের সংস্কার দরকার।
এনবিআর কর্মকর্তাদের দাবি, এনবিআরের ভেতর থেকেই চেয়ারম্যান নিয়োগ হতে হবে। বাইরে থেকে নিয়োগ হওয়া উচিত নয়।
কথা কিছুটা ঠিক, তবে মূল বিষয় কর্মপদ্ধতির সংস্কার দরকার। প্রশাসনিক সংস্কার তো আছেই। রাজস্ব পরিস্থিতির উন্নতি কিভাবে হবে, সেটা দেখতে হবে।
দীর্ঘদিনেও অটোমেশন হয়নি। এর কারণ ব্যবসায়ী এবং এনবিআর কারো মধ্যেই আগ্রহ ও দায়িত্ববোধ নেই। দুই পক্ষেরই সমস্যা আছে। দেশে অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। অন্যদিকে এনবিআরের সংস্কার ও অটোমেশনের জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকে না, মেশিনও কেনা যায় না। এটা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপও নেওয়া হয় না।
ব্যবসায়ীরা মোটেও চান না এটা অটোমেশন হোক। অটোমেশন হলে তাঁদের সমস্যা হবে। হিসাব ব্যবস্থাপনায়, রাজস্ব আহরণে স্বচ্ছতা আনতে গেলে অটোমেশনের বিকল্প নেই।
এটা বাস্তবায়নে এনবিআর এবং যারা ব্যবহার করবে তাদের আন্তরিক ও দায়িত্বশীল হতে হবে। না হলে এতে কোনো সুফল আসবে না। রাষ্ট্র চাইলে অনলাইন সিস্টেম চালু করতে পারে। দায়িত্ব নিয়ে সেটা করতে হবে।
দেশের সংকটকালে বিভিন্ন আর্থিক খাতের মতো রাজস্ব খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আন্দোলন চলাকালে রাজস্ব খাত যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
আমি মনে করি, সাম্প্রতিক এক মাসের প্রেক্ষাপটে মানুষজন খাওয়াদাওয়া বাদ দেয়নি, চলাচল বন্ধ করেনি। ভ্যাট আদায় হয়েছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে।
স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দুর্নীতিমুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করলে এনবিআর তার বাইরে থাকবে না। এনবিআর দুর্নীতিমুক্ত হলে রাজস্ব আদায় আরো বাড়বে। সূত্র কালের কণ্ঠ
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)