বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন বিনোদন অঙ্গনের তারকারা। তবে নীরব ছিলেন ফেরদৌস আহমেদ। এ ভূমিকার কারণে দেশের মানুষের কাছে নায়ক থেকে খলনায়কে পরিণত হন তিনি। এবার ছাত্র আন্দোলনে নীরব থাকায় কলকাতার ছবি থেকেও বাদ পড়লেন ফেরদৌস।
টলিউড প্রযোজক রানা সরকার ‘মীরজাফর চ্যাপ্টার টু ছবি থেকে নাম কেটে দিয়েছেন ফেরদৌসের। ভবিষ্যতেও নিজের কোনো সিনেমায় ফেরদৌসকে নেবেন না বলে জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে।
রানা সরকারের প্রযোজনায় ‘মীর জাফর: চ্যাপ্টার টু’ নামের একটি ছবিতে যুক্ত হয়েছিলেন ফেরদৌস। তবে সিনেমাটির কাজ আর এগোয়নি। ২০২৩ -এর ফেব্রুয়ারিতে শুরুর কথা থাকলেও জ্বলে ওঠেনি ক্যামেরা লাইট।
এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সংসদ সদস্য ছিলেন ফেরদৌস। সরকার পতনের পর থেকেই আত্মগোপনে আছেন। এমতাবস্থায় ছবিটির কতদূর কী এবং ফেরদৌসের এ সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকার সম্ভবনা কতটুকু জানতে চাইলে রানা সরকার জানান, নানাবিধ জটিলতায় কাজ থেমে আছে ‘মীর জাফর: চ্যাপ্টার টু’ র। তবে ছবিটি হলেও রাখা হবে না ফেরদৌসকে।
এ প্রযোজক বলেন, ‘ফেরদৌস ভাই অনেকদিন ধরেই ছবিটির ব্যাপারে সাড়া দিচ্ছিলেন না। আমি ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও উত্তর দেননি। যদিও তার কারণে না, অন্যকারণে থেমে আছে ছবিটির কাজ। তবে কাজ শুরু হলে ফেরদৌস ভাইয়ের জায়গায় অন্য কাউকে নেওয়া হবে।’
এর কারণ জানতে চাইলে ‘জাতিস্বরে’র প্রযোজক বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের বিশেষত ছাত্রদের আবেগের কথা মাথায় রেখে আমার কোনো সিনেমাতে বাংলাদেশের এমন কোনো অভিনেতা বা অভিনেত্রীদের নেব না যারা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন না।’
‘মীর জাফর: চ্যাপ্টার টু’ র ভবিষ্যৎ নিয়ে রানা সরকার বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ছবিটি দুই বাংলায় মুক্তি দেব। সেকারণে দুই বংলার শিল্পীদের নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্ত এখন যে পরিস্থিতি, দুই বাংলা নিয়ে করা সম্ভব হবে কি না বুঝতে পারছি না। তাই এবং অন্য কিছু কারণে কাজ আরম্ভ করতে দেরি করছি। ছবিটি ২০২৩ সালে করার কথা ছিল। কিন্তু নানাবিধ কারণে শুরু হয়নি। দুই বাংলায় মুক্তি দেওয়া না গেলে এর স্বার্থকতা থাকবে না। শুধু পশ্চিমবঙ্গে ছবিটি মুক্তি দেওয়াটা উচিত হবে না। বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়া সম্ভব হলেই ছবিটি নির্মাণের পরিকল্পনা করব।’
এদিকে ছবিতে ফেরদৌস ছাড়াও নাম লিখ্যেছিলেন বাংলাদেশের আরেক চিত্রনায়ক জিয়াউল রোশান। তার ব্যাপারে জানতে চাইলে এ প্রযোজক বলেন, ‘রোশান সিনেমাটি করতে চাইলে থাকবেন।’
‘মীর জাফর: চ্যাপ্টার টু’-এ মোক্তার নামের চরিত্রে কাজ করার কথা ছিল ফেরদৌসের। ছবিটির গল্প এরকম মোক্তারের স্ত্রীর নাম সাবেরা। তাদের ঘরে থাকে জাফর নামের এক পুত্রসন্তান। এদিকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে পালিয়ে আসা জয়া নামের এক তরুণীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে মোক্তারের। জয়ার ঔরসে জন্ম নেয় তার অবৈধ সন্তান মীর।
মুর্শিদাবাদের রাজনীতি নিয়ে গড়ে ওঠা এ সিনেমায় মীর চরিত্রে রূপদান করার কথা রোশানের। অর্কদীপ মল্লিকা নাথের নির্মাণে ছবিটিতে আরও অভিনয় করার কথা ছিল শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়, শ্রীলেখা মিত্র, সৌরভ দাস, প্রিয়াঙ্কা সরকার, অনির্বাণ চক্রবর্তীর।
জেএন/এমআর