২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরে ফাইনালে ওঠেছিল বাংলাদেশ। নেপালের কাছে হেরে যায় ২-০ গোলে। পরের দুই মৌসুমেও ফাইনাল খেলেছিল লাল-সবুজের দল।
দুবারই ভারতের কাছে হেরে যায়। চতুর্থবার ফাইনালে ওঠে ষষ্ঠ আসরে বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টটির শিরোপার দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজুল ইসলামের জোড়া গোলে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কোচ মারুফুল হকের দল।
কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সে স্বাগতিকদের ৪-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মিরাজুলের জোড়া গোলের পাশাপাশি অন্য গোল দুটি করেন রাব্বি হোসেন রাহুল ও পিয়াস আহমেদ নোভা। নেপালের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন সামির তামাং।
বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টটিতে বাংলাদেশের প্রথম শিরোপার পাশাপাশি নেপালের বিপক্ষেও প্রথম জয় এটি। এবারের আসরে গ্রুপপর্বে স্বাগতিকদের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। ২-১ গোলে হেরে যায়। এর আগে আরও তিনবার দেখা হয়েছিল দুদলের। দুটিতে নেপাল জিতেছিল, আর ড্র হয়েছিল একবার।
নেপালের মাঠে ভালো শুরু করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে স্বাগতিক দল। দ্বিতীয় মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার রাজিব হোসেন।
পঞ্চম মিনিটে বাংলাদেশ ম্যাচের প্রথম সুযোগ তৈরি করেন রাইট উইঙ্গার। নবম মিনিটে নেপালের সহজ গোলের সুযোগ ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক মোহাম্মদ আসিফ। নেপাল বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও আসিফের দৃঢ়তায় কোনো বিপদ হয়নি বাংলাদেশের।
২১ মিনিটে ডি বক্সের মধ্যে নিরাজন ধামি ফাঁকা বল বাড়ান অবিনাশ স্যান্তানের দিকে। কিন্তু তিনি বল গোলমুখে মারার চেষ্টা করলেও বাইরে চলে যায়, নেপালের এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়। পরে রাইট উইং দিয়ে রাব্বি হোসেন রাহুল বেশ কিছু আক্রমণ করলেও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি।
আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে দুদলই মেতেছিল। তবে কাঙ্খিত গোলের দেখা পাচ্ছিল না কেউ। অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে নেপালের ডি বক্সের বাইরে স্ট্রাইকার মিরাজুল ইসলাম ফাউলের শিকার হন। ফ্রি কিক থেকে অসধারণ শটে টপকর্নারে গোল করেন মিরাজুল, ১-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফিরে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে নেপাল। এ সময় দারুণ দুটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি। তবে ৫৪ মিনিটে সুযোগ আসে বাংলাদেশের কাছে, লেফট উইং থেকে রাব্বি হোসেনের বাড়ানো বলে হেড করেন রাইট উইঙ্গার, বল বাড়িয়ে দেন মিরাজুলের দিকে।
এবার সহজ হেডে নিজের দ্বিতীয় গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন নাম্বার টেন, ২-০ গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
৭০ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করে বাংলাদেশ। দুই গোল করা মিরাজুলের হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল। তবে ডি বক্সের মধ্যে বল বাড়িয়ে দেন লেফট উইঙ্গার রাব্বি হোসেন রাহুলের দিকে। ডান পায়ে টপকর্নার দিয়ে মনোমুগ্ধকর গোলটি করেন। তৃতীয় গোলের পর নেপালি দর্শকরা বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারতে থাকে।
৮০ মিনিটে প্রথম গোল শোধ করে স্বাগতিক নেপাল। রাইট উইং থেকে বাড়ানো বলের ফ্লাইট বুঝতে ভুল করেন গোলরক্ষক আসিফ। ফাঁকা পোস্টে সহজ হেডে গোল করেন সামির তামাং, খেলায় তখন ব্যবধান দাড়ায় ৩-১।
দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি টাইম দেয়া হয় ১০ মিনিট। এসময় চতুর্থ গোল করে বাংলাদেশ। এবার গোলের দেখা পান গ্রুপপর্বে গোল করা পিয়াস আহমেদ নোভা। আসরে নোভার দ্বিতীয় গোল এটি। শেষপর্যন্ত ৪-১ গোলে জেতে বাংলাদেশ, প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে লাল-সবুজের প্রতিনিধি দল।
জেএন/পিআর