চট্টগ্রামে শেখ হাসিনা, জয়, সায়মা, টিউলিপসহ ২৫ জনের নামে মামলা

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্মদিন পালনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের ধরে থানায় নিয়ে নির্যাতন ও ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির প্রতিবাদে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা, বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিককে আসামি করা হয়েছে।

- Advertisement -

এছাড়াও ২০১৬ সালে চট্টগ্রামের হালিশহরের ওই ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে ৪২৫ জনকে।

- Advertisement -google news follower

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিনের আদালতে মামলাটি করেন ব্যবসায়ী মামুন আলী।

মামলার বাদীর বক্তব্য গ্রহণের পর আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিলে হট্টগোল শুরু হয়। থানায় মামলা গ্রহণের আদেশের দাবিতে বাদী পক্ষের আইনজীবীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বিচারক বিব্রত হয়ে এজলাস থেকে নেমে খাস কামরায় চলে যান। পরে সরাসরি থানায় মামলা নেওয়ার আদেশ দেন বিচারক।

- Advertisement -islamibank

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহিদুল হক, চট্টগ্রাম মহানগরের সাবেক পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার, নগর গোয়েন্দা অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত, নগরের হালিশহর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব কুমার চৌধুরী, আওয়ামী লীগের নেতা এরশাদুল আমীন, হালিশহর থানার তৎকালীন এসআই জামাল উদ্দিন, মাহবুব মোর্শেদ প্রমুখ।

মামলার আবেদনে বাদী উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট নগরের হালিশহর এলাকায় বাদীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান করছিলেন। ওই সময় হালিশহর থানার ওসির নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। সেখানে উপস্থিত থাকা বিএনপির ১৭ জন কর্মীসহ বাদীকে ধরে থানায় নিয়ে যান। থানায় ওসির নেতৃত্বে বাদীকে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। একপর্যায়ে বাদীকে নির্যাতনের ভিডিও তার বাবার কাছে পাঠিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। বাদীর বাবা ওসির দেখানো দুজন লোককে সাত লাখ টাকা চাঁদা দেন।

এছাড়া ঘটনার দিন ওসি প্রণব চৌধুরী তার মুঠোফোনে আসামি শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানাকে ভিডিও কল দিয়ে বাদীকে নির্যাতনের চিত্র দেখান। পরে বাদী জামিনে বেরিয়ে আসার পরও কয়েক দফায় তাকে থানায় ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী মামুন আলীর।

মামুন আলীর আবেদনের শুনানি গ্রহণ করে আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপরই শুরু হয় হট্টগোল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সালাউদ্দিনের আদালতে দুপুর ১২টার দিকে মামলার আবেদন করেন বাদী মামুন আলী। প্রায় ১০ মিনিট শুনানি শেষে বিচারক আদেশ দেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলতে থাকেন; পিবিআইকে তদন্ত নয়, সরাসরি থানায় মামলা নেওয়ার আদেশ দিতে হবে।

একপর্যায়ে বিব্রত হয়ে বিচারক এজলাস থেকে নেমে খাস কামরায় চলে যান। ওই সময় বিচারককে লক্ষ্য করে কটূক্তি করা হয়। পাশাপাশি আদালতের বারান্দায় শতাধিক লোক আদেশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। আইনজীবীরা জানান, ওই সব লোক বাদীর সঙ্গে এসেছিলেন।

এই ঘটনার প্রায় দুই ঘণ্টা পর বিচারক এজলাসে আসেন এবং প্রাথমিক তদন্ত সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।

জানতে চাইলে বাদীর আইনজীবী আশরাফুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শুরু থেকে আমাদের আবেদন ছিল সরাসরি থানায় মামলা হিসেবে নেওয়ার আদেশের জন্য। কিন্তু আদালত পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আমরা বলেছি, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যাব। আদালত তা না দেওয়ায় আমরা পুনরায় জোর আবেদন করেছি। আদালতে অনেকে থাকেন, কে বা কারা কী করেছেন, তা জানি না।’

নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) এ এ এম হুমায়ুন কবির বলেন, এজলাসে হট্টগোল ও আদালতের বারান্দায় মিছিল হচ্ছে শুনে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স পাঠানো হয়।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM