উজান থেকে অব্যাহত পাহাড়ি ঢল এবং রাঙামাটিতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। হ্রদের পানির স্তর পৌছে গেছে বিপদসীমায়। ফলে খোলা হয়েছে ১৬টি জলকপাট।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) হ্রদের পানি কমাতে কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট সাড়ে তিন ফুট করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলীতে নির্গত হচ্ছে।
এর আগে, রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) জলকপাট আড়াই ফুট খোলা থাকলেও হ্রদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় আজ সোমবার সকাল থেকে সাড়ে তিন ফুট করে খুলে দেওয়া হয়।
বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর রয়েছে ১০৮ দশমিক ৭৪ এমএসএল (সমুদ্রপৃষ্ঠ)। হ্রদের সর্বোচ্চ পানি ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল।
কাপ্তাই জল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেন, ‘পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাড়ে তিন ফুট করে গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে ৬৮ হাজার কিউসেক।
পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টি ইউনিট চালু রেখে ২২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এতে পানি ছাড়া হচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার কিউসেক পানি।
এর আগে, গত রবিবার (২৫ আগস্ট) হ্রদের পানি বেড়ে গেলে খুলে দেওয়া হয়েছিল কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি জলকপাট। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টায় স্পিলওয়ে ১৬টি গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
এদিকে কাপ্তাইয়ের পানির স্তর আবারও বেড়ে যাওয়ায় গত দুই সপ্তাহ যাবৎ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হ্রদের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। প্রায় ১৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৮০০ মানুষ অবস্থান করছেন।
রাঙামাটি সদর, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, বাঘাইছড়িসহ অন্যান্য উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। পঞ্চমবারের মতো আবারও পানি বাড়ছে বাঘাইছড়ি উপজেলার বেশ কিছু গ্রামে।
হ্রদের পানি না কমায় দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া মানুষদের। তবে এখনও ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘জেলায় পানিবন্দি মানুষের জন্য ৯২ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাঁধের পানি ছাড়া অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যে পানি কমে আসবে।’
জেএন/পিআর