কক্সবাজারে পাহাড় ধসের পৃথক ঘটনায় দুটি পরিবারের মোট ৬ জন সদস্যের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে কক্সবাজার সদরের ঝিলংজায় মা ও দুই কন্যা শিশু রয়েছে। আর উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রাণ গেছে ৩ জনের।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার হাকিম পাড়া ১৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কক্সবাজার ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন কার্যালয়ের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদৌজা নয়ন জানিয়েছেন, ভারী বর্ষণে উখিয়া ১৪ নম্বর হাকিম পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাহাড়ধসে তিনটি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে।
এতে একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবকরা বিধ্বস্ত ঘরবাড়িতে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারে ঝিলংজার ২নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ ডিককুলে এলাকায় পৃথক অপর পাহাড় ধসের ঘটনায় মা ও দুই শিশু কণ্যার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- দক্ষিণ ডিককুলের মিজানুর রহমানের স্ত্রী আঁখি মনি এবং তার দুই শিশুকন্যা মিহা জান্নাত নাঈমা ও লতিফা ইসলাম।
স্বজনরা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে ভারী বৃষ্টি চলাকালীন মিজানের বাড়ির দিক থেকে পাহাড় ধসের বিকট শব্দ শোনা যায়। পরে সেখানে গিয়ে দেখেন সপরিবারে মাটিচাপা পড়েছে মিজান।
তাৎক্ষণিকভাবে মিজানকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। পরে দমকল বাহিনীর সহযোগিতায় উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে স্ত্রী ও দুই শিশুকন্যার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
তারা আরও জানায়, মিজানের বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে মাটি নরম হয়ে যায়। পরে মধ্যরাতে ওপর থেকে পাহাড়ধসে তার বাড়িতে পড়ে।
এদিকে গত বুধবার থেকে কক্সবাজারে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত আছে। ভারী বর্ষণের কারণে বৃহস্পতিবার জেলা শহরসহ বেশ কিছু গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
বৃষ্টি ও পাহাড় থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে অনেকের বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে, প্লাবিত হয়েছে বেশকিছু গ্রাম । এতে বিভিন্ন এলাকায় মানুষের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, কক্সবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে একদিনে সর্বোচ্চ রেকর্ড। ভারি বৃষ্টিতে জেলার অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
জেএন/পিআর