একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নগরের ৬টি আসনে আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত প্রার্থীদের জয়যুক্ত করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চট্টগ্রাম নগরের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে এ সময় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা থাকলে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হবে।
চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকারের বিগত ১০ বছরে গৃহীত নানা প্রকল্প প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, সরকারের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ডোর টু ডোর ময়লা অপসারণ কার্যক্রম, ৪ হাজার বিলবোর্ড অপসারণ, ১ হাজার ২শ’ ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক নেটওয়ার্ক প্রকল্প, ৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক কসাইখানা নির্মাণ, বর্জ্য বিদ্যুৎ প্রকল্প, কুলগাঁওয়ে বাস টার্মিনাল নির্মাণ, বারইপাড়া খাল নির্মাণসহ নানা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতোমধ্যে কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল নির্মাণ, গভীর সমুদ্র বন্দর ,বে-টার্মিনাল, মেরিন ড্রাইভ সংযোগ সড়ক, নগরের উপকূলীয় বাঁধ নির্মাণ এবং সন্দ্বীপ চ্যানেল সাবমেরিন ক্যাবল লিংক লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নে উদ্যোগ সম্পন্ন হয়েছে।
এছাড়া বাকলিয়া এক্সেস রোড, সিটি আউটারলিংক রোড, মেরিনড্রাইভ চাক্তাই-কালুরঘাট প্রকল্প, ফ্লাইওভার লালখান বাজার-বিমান বন্দর প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।
মেয়র বলেন, সিটি করপোরেশনের ২ হাজার ৪শ’ কোটি টাকার প্রকল্প, চট্টগ্রাম মহানগরে এলইডি বিদ্যুতায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে।
মেয়র নাছির বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ৪টি ফ্লাইওভার নির্মাণ, ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, ১৮০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পতেঙ্গা-ফৌজদারহাট আউটার লিংক রোড নির্মাণ, ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পসহ ৮২ কোটি টাকার প্রকল্পকাজ চলছে।
এছাড়া নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড গৃহীত প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটিও একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এই দশ বছরে চট্টগ্রাম ওয়াসা গৃহীত প্রায় ৯ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। যার ফলে চট্টগ্রামের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ পানি পাচ্ছে। বাকলিয়াসহ অনেক এলাকায় সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত হয়েছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নে সরকারের কর্মযজ্ঞের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এই দশ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ হাজার ৬৭১ কোটি মার্কিন ডলারের উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন হয়েছে।
তাছাড়া দোহাজারী-ঘুমধুম রেললাইন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ফোর লেনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। এসব কাজ সম্পন্ন হলে চট্টগ্রামের মানুষই আর চট্টগ্রামকে চিনবে না। এই নগর তার হারানো ‘প্রাচ্যের রাণী’ খ্যাতি ফিরে পাবে।
এছাড়া কালুরঘাট ব্রিজের কাজ একনেকে অনুমোদনের প্রক্রিয়ায় আছে। আগামীতে সরকার গঠন করতে পারলে কালুরঘাট সেতু নির্মাণ করা হবে।
মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতিতে এগিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম এগিয়ে গেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এই মেগা প্রকল্পগুলো চট্টগ্রামে দৃশ্যমান করতে হলে ব্যালটের মাধ্যমে ৩০ ডিসেম্বর নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় মেয়র নগরবাসীর কাছে চট্টগ্রাম মহানগরে মহাজোট ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুণ্ড) আসনের দিদারুল আলম, চট্টগ্রাম–৫ (হাটহাজারী) আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (লাঙ্গল), চট্টগ্রাম–৮ (বোয়ালখালী) মইন উদ্দীন খান বাদল ( জাসদ), চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, চট্টগ্রাম–১০ (ডবলমুরিং) আফছারুল আমীন, চট্টগ্রাম-১১ এম এ লতিফসহ চট্টগ্রামের ১৬ আসনের প্রার্থীদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান ।
চট্টগ্রাম-১১ আসনে মহাজোট প্রার্থী এম এ লতিফ ছাড়া বিভিন্ন আসনের প্রার্থী এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী , নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক শফর আলী, নগর শ্রমিক লীগের সভাপতি বখতেয়ার উদ্দিন খান সভায় উপস্থিত ছিলেন।