লালমনিরহাট সীমান্ত দিয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার দেশত্যাগের তথ্য মিলছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। এর মধ্যে আছেন পুলিশ সদরদপ্তরের প্রলয় কুমার জোয়ার্রদার ও এসবির সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলামসহ অন্তত চারজন। এবার সামনে এসেছে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে এক সাবেক শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তার দেশত্যাগের ঘটনা।
১৮ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে মালয়েশিয়াগামী এমএইচ-ওয়ান-জিরো-থ্রি ফ্লাইটে সিডনির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন ট্যুরিস্ট পুলিশের সাবেক প্রধান রেজাউল আলম। তিনি ৫ আগস্টের পর হওয়া একটি হত্যা মামলায় অভিযুক্ত।
এসব ঘটনার সমালোচনা করে বিশ্লেষকেরা বলছেন, পুলিশের বিশেষ শাখাসহ (এসবি) গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অপেশাদার আচরণই এর কারণ।
৪ আগস্ট রাজধানীর পল্টনে হোটেল লিভিংয়ের সামনে হামলা-হত্যার ঘটনায় করা হয় একটি মামলা। সেই মামলার ৩৭ নম্বরে আসামি সাবেক ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান রেজাউল আলম। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনারসহ কাজ করেছেন নানা পদে। ছিলেন কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার।
তবে রেজাউলের পালিয়ে যাওয়ার দুদিন পর চেষ্টা করেও দেশে ছাড়তে পারেননি ডিএমপির আরেক সাবেক কমিশনার। এ অবস্থায় পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, পলাতক কর্মকর্তাদের খোঁজে বিশেষ উদ্যোগ আসছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাঁদের অবস্থান জানতে আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি। এবং যে ১৮৭ জন পুলিশ সদস্য বিভিন্ন কারণে এখনও অনুপস্থিত তাঁদের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়ে গেছে।’
এদিকে, অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, এসব ঘটনা পুলিশের ক্ষমতার অতি ব্যবহারের ফল। পেশাদারিত্ব না থাকাই এর বড় কারণ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুস সাকিব বলেন, ‘যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল তখন বেশ কিছু পুলিশ কর্মকর্তাদের নাম মানুষের মুখে মুখে ছিল। যেমন কোহিনুর মিয়ার নাম আমরা শুনেছিলাম। আওয়ামী লীগ আমলেও এমনটা হয়েছে। এবারের বাস্তবতায় যদি আমরা দেখি, এবার সাধারণ জনগণের মূল লক্ষ্য ছিল পুলিশ।’
পুলিশের অভিযুক্ত এসব কর্মকর্তা জানেন গোয়েন্দাদের কাজের ধরন। সে কারণেই তাঁদের নজরদারিতে আনা বা শনাক্তে বেগ পেতে হচ্ছে বলেও জানান বিশ্লেষকেরা।
জেএন/এমআর